ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আরব-মুসলিম শীর্ষ সম্মেলন শুরু, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আশা

আরব-মুসলিম শীর্ষ সম্মেলন শুরু, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আশা

কাতারের রাজধানী দোহায় জরুরি বৈঠকে আরব ও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়েছেন। কাতারে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষিতে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দোহায় শুরু হয়েছে আরব লীগ ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এর জরুরি সম্মেলন। এর একদিন আগে (রোববার) অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দোহায় একান্ত বৈঠকে বসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য এবং কার্যকর পদক্ষেপের খসড়া প্রস্তাব প্রস্তুত করেন।

গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের হামলায় পাঁচজন হামাস সদস্য এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের একটি আলোচনা দল, যারা দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক করছিল। ওই প্রস্তাবটি গাজায় ইসরায়েলের দুই বছরের চলমান যুদ্ধ শেষ করার উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছিল, যাকে প্রতিবেদনে ‘নরসংহারমূলক’ যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

রোববারের অধিবেশনে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জাসিম আল থানি ইসরায়েলের হামলাকে “বর্বর” হিসেবে আখ্যা দেন এবং বলেন, কাতারের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে আঞ্চলিক সমর্থন রয়েছে।

তিনি বলেন, “এই বর্বর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানানো ভ্রাতৃপ্রতিম আরব ও ইসলামিক দেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সংহতির জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কাতার তার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বৈধ ও আইনগত পদক্ষেপ নিতে চায়।”

সম্ভাব্য পদক্ষেপের দিকনির্দেশ

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্মেলনকে একটি “স্পষ্ট রোডম্যাপ” দিতে হবে।

আল জাজিরার ওসামা বিন জাভেদ-কে তিনি বলেন, “বিশ্বের মুসলমানরা এই সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছে, সবাই দেখছে এতে কী সিদ্ধান্ত আসে।”

দোহার ওপর ইসরায়েলি হামলার দুই দিন পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আসিফ বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে “দৃঢ় পদক্ষেপ” নেওয়া প্রয়োজন এবং কোনো দেশই যেন না ভাবে যে গাজা যুদ্ধ তার ওপর প্রভাব ফেলবে না।

ওই একই সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপে ইসহাক দার বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনাগুলোতে কোনো ফল আসেনি, এ নিয়ে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।

বাস্তব পদক্ষেপ হিসেবে কী নেওয়া যেতে পারে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, তারা (আরব দেশগুলো) ইতিমধ্যে এসব বিষয়ে কথা বলেছে। এটি এক ধরনের সম্মিলিত নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের প্রস্তাব। একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে পাকিস্তান উম্মাহর অংশ, এবং দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত।”

অন্যদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান দোহায় রওনা দেওয়ার আগে বলেন, “ইসলামিক দেশগুলো ইসরায়েলের এই ভুয়া শাসনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে এবং ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখতে পারে।” তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন যে সম্মেলনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মুসলিম দেশগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও সম্মেলন থেকে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, সোমবার সন্ধ্যায় শেষ হতে যাওয়া এই সম্মেলনটি প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নিতে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা

দোহা,আরব-মুসলিম শীর্ষ সম্মেলন,ইসরায়েল,কঠোর পদক্ষেপ,ওআইসি,আরব লীগ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত