
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞাসমূহ স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার না করার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইরানের অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত হিসেবে মনে করা হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল রোধের প্রস্তাবটি চারটি ভোটের পক্ষে ও নয়টি ভোটের বিপক্ষে পড়ে। ফলে বড় কোনো চুক্তি না হলে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।
আর ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সিয়েরা লিওন, স্লোভেনিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস, পানামা ও সোমালিয়া। এ তথ্য ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনার। গায়ানা ও দক্ষিণ কোরিয়া ভোট থেকে বিরত ছিল।
এই ভোটের আগে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি আগস্টের শেষ দিকে ৩০ দিনের প্রক্রিয়া শুরু করে, যেখানে তারা ইরানের ওপর তাদের দাবি পূরণ না করলে নিষেধাজ্ঞা পুনঃপ্রবর্তনের চেষ্টা করেছিল।
শুক্রবারের অধিবেশনে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি ও জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন, ‘আজকের সিদ্ধান্ত হঠাৎ, অপ্রয়োজনীয় এবং অবৈধ। ইরান এটি মানতে বাধ্য নয়। এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং নিরাপত্তা পরিষদের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।” তিনি আরও বলেন, “ই-থ্রি দেশগুলো আলোচনার সুযোগ নষ্ট করেছে এবং শুধু উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।”
ইরানের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ২০১৫ সালের পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (জেসিপিওএ) ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করছে। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ বলেন, ইউরোপীয়রা যা করছে, তা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা জেসিপিওএ চুক্তির অন্তর্ভুক্ত প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করছে।
ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ বলেন, ইউরোপীয়রা যা করছে তা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা যৌথ পরমাণু চুক্তিতে (জেসিপিওএ) অন্তর্ভুক্ত ব্যবস্থার অপব্যবহার চেষ্টার মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে ভুল করছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে ইরান জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে নতুন এক চুক্তি করে যার আওতায় সংস্থাটিকে তেহরানের পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের অনুমতি দেয়ার কথা বলা হয়। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর সহযোগিতা স্থগিত করে তেহরান। এরপরও ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হলো।
আবা/এসআর/২৫