ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আজই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য

আজই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্য আজ ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এই পদক্ষেপটি জুলাই মাসে স্টারমারের দেওয়া এক বক্তব্যের ধারাবাহিকতা, যেখানে বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি মেনে না চলে এবং একটি টেকসই, দীর্ঘমেয়াদী শান্তিচুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হয়—যা একটি দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নিশ্চিত করে—তবে যুক্তরাজ্য তার অবস্থান পরিবর্তন করবে।

এই ঘোষণা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে। কারণ ব্রিটেনের পূর্ববর্তী সরকারগুলো বারবার বলে এসেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি তখনই দেওয়া উচিত, যখন তা শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে “সর্বোচ্চ প্রভাব” ফেলবে। সেই নীতির বাইরে এসে এবার স্টারমার সরকার সরাসরি স্বীকৃতির ঘোষণা দিতে যাচ্ছে।

এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েলি সরকার, গাজায় জিম্মি হওয়া পরিবারের সদস্যরা এবং যুক্তরাজ্যের কিছু কনজারভেটিভ রাজনীতিবিদ।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাজ্যের এই সম্ভাব্য পদক্ষেপকে “সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার সামিল” বলে মন্তব্য করেছেন।

অন্যদিকে, ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বলছেন—গাজায় যে মানবিক বিপর্যয় চলছে, তার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে শান্তির সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখার। সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে অবনতি ঘটেছে। গাজাবাসী চরম ক্ষুধা ও সহিংসতার মুখে পড়েছে—যা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এর আগেও "অসহনীয়" বলে উল্লেখ করেছিলেন।

জাতিসংঘের এক কর্মকর্তার ভাষায়, গাজা শহরে ইসরায়েলের সর্বশেষ স্থল অভিযান ছিল "বিপর্যয়কর"—যার ফলে শত-শত হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এই সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের একটি তদন্ত কমিশন জানায়, গাজায় ইসরায়েল “গণহত্যা” চালিয়েছে। তবে ইসরায়েল এই প্রতিবেদনকে “বিকৃত ও মিথ্যা” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা আরও বলেন, পশ্চিম তীরে অব্যাহত ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ, যা আন্তর্জাতিক আইনের চোখে অবৈধ, এ সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ। বিশেষ করে ই১ বসতি প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।

বিচারমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, যিনি জুলাই মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন এবং তখনই স্বীকৃতির পথে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, বিতর্কিত ই১ বসতি প্রকল্পের উদাহরণ টেনেছেন। সমালোচকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কার্যকর এবং সংযুক্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।

ডেভিড ল্যামি বলেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পেছনে পশ্চিম তীরে যে গুরুতর বসতি সম্প্রসারণ আমরা দেখছি, বসতি-সম্পর্কিত সহিংসতা এবং বিশেষ করে ই১ প্রকল্পের মতো উন্নয়ন পরিকল্পনার ইঙ্গিতগুলো রয়েছে, যেগুলো দুই-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে।”

সূত্র: বিবিসি

ফিলিস্তিন,রাষ্ট্র,স্বীকৃতি,যুক্তরাজ্য,ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী,কিয়ার স্টারমার,ইসরায়েল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত