ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধে ‘গ্যারান্টি’ চায় হামাস

ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধে ‘গ্যারান্টি’ চায় হামাস
ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং গাজা যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলের ‌‘গ্যারান্টি’ চায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।

বুধবার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁরা এমন একটি গ্যারান্টি চাইছেন যাতে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে—যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার অংশ। এই আলোচনা মিশরে পরোক্ষভাবে চলছে এবং মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের আলোচনার সমাপ্তি ঘটেছে।

হোয়াইট হাউসে গাজা যুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, একটি গাজা চুক্তির “বাস্তব সম্ভাবনা” রয়েছে। ওইদিন মিশরের শারম আল-শেখ শহরে আলোচনা শেষ হয়।

কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা বুধবারের আলোচনা পর্বে অংশ নিতে মিশরে যাচ্ছেন।

এর আগে মঙ্গলবার, হামাসসহ একাধিক ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর একটি জোট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা “সব উপায়ে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে” এবং “ফিলিস্তিনি জনগণের অস্ত্র আত্মসমর্পণ করানোর অধিকার কারও নেই”—এই বক্তব্যে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় থাকা হামাসের নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ফাওজি বারহুম জানান, তাঁদের দল যুদ্ধ বন্ধ এবং “দখলদার বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার” চায়। তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাস ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দিকে ফিরিয়ে দিলে ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার শুরু হতে পারে—যার মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবারের আলোচনার পর এক হামাস কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আল জাজিরাকে বলেন, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারা বন্দিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দিতে চায়।

তিনি আরও জানান, ওইদিনের আলোচনা মূলত বন্দিমুক্তির সময়সূচি এবং ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহারের রূপরেখা নির্ধারণ নিয়ে হয়েছিল। হামাস পরিষ্কার করেছে—শেষ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার ঘটনাটি ইসরায়েলি বাহিনীর চূড়ান্ত প্রত্যাহারের সঙ্গে মিলিয়ে ঘটতে হবে।

হামাসের প্রধান আলোচক খালিল আল-হাইয়া মিশরের রাষ্ট্রীয় ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম আল কাহেরা নিউজকে বলেন, তারা “দখলদার শক্তির উপর এক মুহূর্তের জন্যও আস্থা রাখে না।” তিনি জানান, হামাস এমন “বাস্তব গ্যারান্টি” চায় যাতে যুদ্ধ শেষ হয় এবং তা যেন পুনরায় শুরু না হয়। তিনি ইসরায়েলকে গাজা যুদ্ধের আগের দুটি যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার অভিযোগও তোলেন।

এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বে হওয়া হামলার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, গত দুই বছরের সংঘাত ছিল “আমাদের অস্তিত্ব ও ভবিষ্যতের জন্য একটি যুদ্ধ”।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল “গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের দিনগুলোর” মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যদিও সরাসরি যুদ্ধবিরতির আলোচনার প্রসঙ্গ তিনি এড়িয়ে যান। নেতানিয়াহু জানান, ইসরায়েল “যুদ্ধের সব লক্ষ্য পূরণে কাজ চালিয়ে যাবে”—এর মধ্যে রয়েছে সব বন্দির মুক্তি, হামাসের শাসনের অবসান এবং গাজা যেন আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয় তা নিশ্চিত করা।

ইসরায়েল,ফিলিস্তিন,গাজা যুদ্ধ,গ্যারান্টি,হামাস,প্রত্যাহার,সেনা,২০ দফা পরিকল্পনা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত