ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জনবল সংকটে মোরেলগঞ্জ প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল

জনবল সংকটে মোরেলগঞ্জ প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল

উপকূলীয় জেলায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটিরিনারি হাসপাতাল জনবল সংকটে ভুগছে। একযুগের বেশি সময় ধরে এ হাসপাতালের ১১টি পদের মধ্যে ৮টি পদই রয়েছে শূন্য। যে কারণে ২ লাখ কৃষকের গবাদিপশু ও হাঁস মুরগির চিকিৎসা ব্যবস্থা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের দাবি- গবাদিপশুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাক্তারসহ জনবল বৃদ্ধি করার।

সরেজমিনে ও অফিসসূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার গবাদিপশুর হাঁস-মুরগির চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণে আশির দশকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটিরিনারি হাসপাতালটি স্থাপিত হলেও একদিকে যেমন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া অন্যদিকে একযুগের বেশিসময় ধরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদসহ গুরুত্বপূর্ণ ৮টি পদই শূন্য রয়েছে। সদ্য যোগদান করা ভেটিরিনারি সার্জন ডা. মো. আবু হানিফ যোগদনের পর থেকে একাই দায়িত্ব পালন করছেন কর্মকর্তার পদসহ দুটি পদের। এছাড়াও এ দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছেন অফিস সহায়ক ১ জন, ফিল্ড এসিট্যান্ট (কৃত্রিম প্রজনন) ১ জন। তিনজন দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে এ হাসপাতালটি। ভেটিরিনারি সার্জন যোগদানের পর অফিসের চিত্র কিছুটা পরিবর্তন হলেও একারপক্ষে অফিসিয়াল দাপ্তরিক কাজসহ গবাদিপশুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদ ৪ মাস ধরে শূন্য, ফিল্ড এসিট্যান্ট ৩টি পদই শূন্য রয়েছে ৫/৬ বছর ধরে। ড্রেসার পদে ১ জন থাকার ফাঁকা থাকলেও সে পদটি রয়েছে ১৫ বছর ধরে শূন্য। উপজেলা লাইভ স্টক এসিট্যান্ট পদটি ১০ বছর ধরে শূন্য। এছাড়াও এমএলএসএস পদের ১ জন ১৫ বছর ধরে শূন্য। যে কারণে এর প্রভাব পড়ছে মাঠ পর্যায়ে চিকিৎসা সেবায়। সেবা নিতে এসে অনেকের দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়। আবার কর্মকর্তা দাপ্তরিক কাজে অনেক সময় বাইরে থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা মানুষকে ফিরে যেতে হয়। প্রতি মাসে এ হাসপাতাল থেকে পোল্ট্রি ফার্ম, ডেইরি ফার্ম, ছাগল ফার্ম, ভেড়ার খামারসহ প্রাণিসম্পদের রেজিস্ট্রেশনকৃত ১৮০০ খামার মালিকরা সেবা এছাড়াও ১০ হাজার হাঁস মুরগি, ৩ হাজার গবাদিপশুর ভ্যাকসিন গ্রহণ করে থাকে। প্রতিমাসে ২টি প্রি মেডিকেল ক্যম্পে গ্রাহকরা সেবা নেয়। দেশের ২য় বৃহত্তর এ উপজেলায় ৭০ হাজার গাভি থেকে প্রতি মাসে ১৫০০ মেট্রিকটন দুধ, ১৪১৭ টন মাংস ও ২/৩ কোটি ডিম উৎপাদন করে তা নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও বাইরে সাপ্লাই দেওয়া হয়। যা থেকে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। গুরুত্বপূর্ণ এ হাসপাতালটিতে জনবল সংকটের সমস্যার অচিরেই সমাধান না হলে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে স্থানীয় খামারি মালিকরা আশঙ্কা করেছেন।

এসম্পর্কে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভেটিরিনারি সার্জন) ডা. মো. আবু হানিফ বলেন, এ হাসপাতালে জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। তবে গবাদিপশুর ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা প্রদানের আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত