ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কাউখালীর দুই বিদ্যালয়ের ৪২ পদের ৩২টি শূন্য

কাউখালীর দুই বিদ্যালয়ের ৪২ পদের ৩২টি শূন্য

পিরোজপুরের কাউখালীতে মাধ্যমিক স্তরের ২টি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও ৪২টি শিক্ষক কর্মচারীর পদের ৩২টি রয়েছে শূন্য। ফলে শিক্ষার জন্য জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষকের পদগুলো শূন্য থাকায় পাঠদান বিহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বিদ্যালয় ২টি। এমন অভিযোগ এখন ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মুখে মুখে। ১৯৮৬ সালে কাউখালী এসবি বালিকা বিদ্যালয় এবং কেজি ইউনিয়ন বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটিকে সরকারি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে রাষ্ট্রায়ত্ব সরকারি প্রতিষ্ঠান ২টি কোনো সময়ই পূর্ণাঙ্গ শিক্ষক কাঠামো পায়নি। অথচ সরকারি হওয়ার পর থেকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চললেও বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান দুটি কালের সর্বোচ্চ শিক্ষক কর্মচারী সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটিতে ৩৪টি শিক্ষকের পদ ও ১০টি তৃতীয়/চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ আছে অথচ দুটি বিদ্যালয় কর্মরত আছে মাত্র ১০ জন।

বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক ও শ্রেণি শিক্ষক সংকটের কারণে সঠিকভাবে চলছে না পাঠদান কর্মসূচী। উপজেলার প্রায় দের লাখ জনসংখ্যাসহ ভৌগলিক কারণে পার্শ্ববর্তী নেছারাবাদ ও রাজাপুর উপজেলার অনেক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থাও অনেকাংশে নির্ভর করছে এই দুইটি বিদ্যালয়ের উপরে। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির পাঠদানের এই দূরাবস্থার কারণে ছিটকে পড়ছে সাধারণ পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে শহরমুখী হচ্ছে সচ্ছল পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীরা। শিক্ষক সংকট, ক্লাস না হওয়া ও কোচিং বাণিজ্যের ফলে স্থানীয় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে হতাশ। শূন্য পদ পূরণের দাবি জানাতে আন্দোলন কিংবা মানববন্ধনে যেতে চায় ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকর। অভিভাবকদের দাবি ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান ঠিক রাখতে অতিসত্তর শিক্ষক-কর্মচারীদের শূন্য পদ পূরণ করা না হলে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন অনেক ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক। ছাত্র অভিভাবক মাওলানা মহিউদ্দিন কাজী এবং ছাত্রী অভিভাবক অ্যাডভোকেট জহুরুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে সরকারি স্কুলগুলোতে শিক্ষক সংকট রয়েছে তবে কাউখালী উপজেলার দুইটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট সর্বাধিক। দুইটি বিদ্যালয়ের প্রায় ৩২টি পদ শূন্য। এ যেন শূন্যতায় ভাসছে কাউখালীর শিক্ষা ব্যবস্থা। এসবি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষকের ১৭টি পদ থাকলেও ১১ জন নাই এবং কর্মচারীদের চারটি পদের সব কয়টি পদ শূন্য রয়েছে। তবে অতিথি শিক্ষক দিয়ে জোড়া তালি দিয়ে কোনোভাবে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি কেজি ইউনিয়ন বালক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন ১৭ জন পদ থাকলেও চারজন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করতে হয়। কারণ হিসেবে বলেন দুইজন শিক্ষক এক বছরের জন্য বিপিএড প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন বাকি শিক্ষক কর্মচারীদের পথগুলো শূন্য রয়েছে। অতিথি শিক্ষক দিয়ে কোনোভাবে ক্লাস পরিচালনা করা হয়। যার ফলে স্কুলের বর্তমান এসএসসি পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ঘটেছে। এ ব্যাপারে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন শিক্ষক সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষক সংকটের সমাধান হবে। শিক্ষক সংকটে শুধু কোনো এক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নষ্ট হচ্ছে না বরং দেশেরও ক্ষতি হয়। এ বিষয়টি উপলব্ধি করে সরকার শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত