
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় ভোগান্তিতে শিক্ষকরা। অন্যদিকে তদারকির অভাবে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের ইচ্ছামত ক্লাশ শুরু ও শিক্ষার্থীদের ছুটি প্রদান করছেন। অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি এ উপজেলা থেকে অবসরে যান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু তাহের মো. কামরুল হাসান। তাছাড়া গত ১০ বছর যাবত এ উপজেলায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারও নেই। গত ৩ ফেব্রুয়ারি পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান সরকারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি কোনো সপ্তাহে ১ দিন আসেন আবার কোনো সপ্তাহে আসেনি না।
এভাবে ৬টি মাস যাবত শিক্ষা অফিসারের জন্য ভোগান্তিতে রয়েছেন শিক্ষকরা। গত ২৩ জুলাই সকাল ১১টায় সরেজমিনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষা অফিসারের রুমে তালা, হিসাব রক্ষকের অফিস রুমেও ঝুলছে তালা, শুধু অফিস সহায়ক একাই বসে রয়েছেন। ২৪ জুলাই ১১টার পর গিয়ে দেখা যায় একই চিত্র। এসময় কয়েকজন শিক্ষককে কাজের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। উপজেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বালাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলহাজ সাইদার রহমান জানান, ‘অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সপ্তাহে ১-২ দিন অফিস করছেন। নিয়মিত অফিস না করায় অফিসিয়াল কাজগুলো করতে আমাদের শিক্ষকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তিনি জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামান্য কাজের জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে। শিক্ষকদের ভোগান্তিরোধে অতিদ্রুত এ উপজেলায় অফিসার নিয়োগের জন্য জোর দাবি জানান তিনি।’ জানা যায়, জলঢাকা উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৩টি, কলেজ ৭টি ও এমপিওভুক্ত ২৩টি মাদ্রাসা রয়েছে।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারের মাসে কমপক্ষে ১০টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের নিয়ম থাকলেও বিদ্যালয়গুলো নিয়মিত পরিদর্শন না থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান ২-৩টার মধ্যে ছুটি হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ছিটমীরগঞ্জ শালনগ্রাম ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এতো বড় উপজেলায় অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্বের কোনো অফিসারকে দিয়ে কাজ করানো সম্ভব নয়। অফিসারের শূন্যতায় আমাদের শিক্ষকদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।’ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মাফরুহা আক্তার জানান, ‘মাধ্যমিক অফিসার ও সহকারী অফিসার না থাকায় অফিসের কাজকর্ম করে বিদ্যালয় পরিদর্শন করাটা আমার পক্ষে খুবই কষ্ট হয়।
এতে মাঝে মধ্যে ঝামেলাও সৃষ্টি হয়।’ জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও জলঢাকা উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার আশরাফুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমার একার পক্ষে দুটি উপজেলার দায়িত্ব পালন খুবই কষ্টদায়ক। এতে শিক্ষকদেরই ভোগান্তি হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ ইমরুল মোজাক্কিন জানান, ‘মাধ্যমিক অফিসার না থাকার বিষয়টি ডিসি স্যারকে অবগত করেছি, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হবে।’