ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুন্দরবন বাঁচাতে বাঘের আবাসস্থল নিরাপদ রাখার দাবি

সুন্দরবন বাঁচাতে বাঘের আবাসস্থল নিরাপদ রাখার দাবি

গতকাল মঙ্গলবার ছিল বিশ্ব বাঘ দিবস। নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে দিনটি পালন করছে বন বিভাগ। বিশ্বের সবথেকে বড় একক ম্যানগ্রোব বন সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে বাঘের আবাস স্থল নিরাপদ করার তাগিদ দিয়েছে গবেষকরা। সর্বশেষ বাঘ শুমারির ফলাফলে সুন্দরবনে ১২৫টি বাঘের তথ্য মিলেছে। বাঘের আবাসস্থল নিরাপদ থাকলে পরবর্তী শুমারিতে এই সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়ে যাবে দাবি করেছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী।

তবে সুন্দরবনে বাঘের আবাসস্থলে সম্প্রতি বন ডাকাত ও চোরা শিকারিদের অপতৎপরতায় খানিকটা অনিরাপদের আশংকা করছেন এই কর্মকর্তা। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ২০১৫ সালে প্রথম শুমারি সংখ্যা ছিল ১০৬টি, ২০১৮ সালে ১১৪টি, সর্বশেষ ২০২৫ সালে ঘোষিত ফলাফলে ১২৫টি বাঘের তথ্য মিলেছে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে নিরাপদ রাখতে বাঘ বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা নিশ্চিতের দাবি করেছেন বাঘ ও বণ্যপ্রাণী গবেষক ড. নাসির উদ্দিন। সুন্দরবনের বণ্যপ্রাণী প্রজনন নিরাপদ রাখতে ৩০ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বনে সব ধরনের প্রবেশ বন্ধরাখা হয়েছে। এই সুযোগে কিছু অসাধু চোরা কারবারিরা লুকিয়ে লুকিয়ে বনে প্রবেশ করে হরিণ, শুকোর ও বাঘ শিকারের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। বন বিভাগ ও কোস্টগার্ড এই চক্রকে আইনের আওতায় আনতে কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি অভ্যাহত রেখেছে। এই ধারা বাহিকতায় বিগত কয়েক মাসে সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মিটার হরিণ ও শুকোর ধরার ফাঁদ। আটক হয়েছে চোরাশিকারি ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার অপরাধী। এরমধ্যেই আবারও বাড়ছে বন ডাকাতদের আনাগোনা। একের পর এক হুমকিতে সংকুচিত হচ্ছে বাঘের নিরাপদ আবাসস্থল। বিশ্বের বিপন্ন প্রাণীদের তালিকায় থাকা বনের রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগার আজ নিজেই চরম বিপদে। তবে সচেতনতা বেড়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে।

ভিটি আরসি সদস্যরা আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, বনে কেউ ফাঁদ পাতলে জানতে পারলেই বনবিভাগে দ্রুত জানিয়ে দেয়। বাঘকে এখন তারা ভয় নয়, বন রক্ষার বন্ধু হিসেবে দেখে থাকেন। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন, মোংলার স্ট্যাফ অফিসার অপারেশন কমান্ডার আবরার হাসান জানান, বিপন্ন রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষায় আমাদের অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র গোলাবারুদসহ হরিণ ও বাঘ ধরার ফাদ এবং দুষ্ককৃতকারীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সুন্দরবন ও বনের বণ্যপ্রাণী রক্ষায় আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক, ইমরান আহমেদ, জানান, সুন্দরবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। স্মার্ট প্যাট্রোল, ড্রোন, জিও-ট্যাগড ডেটা ব্যবহার করে প্রতিটি কোনায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাঘ সংরক্ষণে প্রয়োজন স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ, তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং গবেষণালব্ধ তথ্যের বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে বাঘ ও বন উভয়ের সুরক্ষা সম্ভব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত