
সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে রোপা আমন ধানের গাছের গোড়া পচন ও মাজরা পোকার আক্রমণের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে অনেক মাঠে এ পোকার প্রভাব বিস্তার ঘটছে।
এ পোকা প্রতিরোধে কৃষকেরা জমিতে কীটনাশক স্প্রে করছেন। এতে অনেক কৃষক এ পচন ও পোকা দমনে হিমশিম খাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। মাঠে মাঠে এ ধান খেতের সমারোহ সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ করে পড়ন্ত বিকালে কৃষক ও নানা বয়সি মানুষ এ সবুজ ঘেরা দৃশ্য দেখতে যায়। কিন্তু সপ্তাহ ধরে জেলার বিভিন্ন স্থানে ধান খেতে পচন রোগ ও মাজরা পোকা দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে এ আক্রমণের প্রভাব বিস্তারও ঘটছে। ধানের গোড়া পচনে গাছ সাদা হয়ে যাচ্ছে এবং মাজরা পোকা আক্রমণে ধান গাছের কাণ্ড কেটে দিচ্ছে।
এ কারণেও অনেক ধান খেত বিনষ্ট হচ্ছে। তবে এ জেলার শয্যভাণ্ডার খ্যাত তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর উপজেলা ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে এ রোগের আক্রমণ বেশি।
সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ এ পোকা দমনে কৃষকদের নানারকম পরামর্শ দিচ্ছে। এ পরামর্শে কৃষকেরা ধান খেতে অনুমোদিত কীটনাশক এস্পায়ার (তরল) ও লোভাল পাউডারসহ বিভিন্ন কীটনাশক ক্রয় করছে এবং পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত ধান খেতে স্প্রে করা হচ্ছে। এতে অনেক আক্রান্ত ধান খেতের পচন ও পোকা দমন হচ্ছে।
তবে পচন ও পোকা দমনের কীটনাশকের দাম বেশি থাকায় অনেক কৃষক ক্রয় করতে হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে আলোর ফাঁদে এ পোকা দমন করছে। উল্লাপাড়া উপজেলার উলিপুর ও আমডাঙ্গা গ্রামের কৃষক খবির (৪২) ও বাবলু (৫৯) বলেন, প্রতিবছর রোপা আমন ধান খেতে পচন ও পোকা ধরে। এজন্য কীটনাশক স্প্রে করে এ রোগ প্রতিরোধ করতে হচ্ছে। তবে বাজারে বিভিন্ন কীটনাশকের দাম বেশি বলে তারা উল্লেখ করেন। স্থানীয় কৃষিবিদরা বলছেন, কিছুটা আবহওয়া পরিবর্তন ও খেতে পানি ধরে থাকায় মাজরা পোকার সৃষ্টি হয়ে থাকে এবং জমিতে বেশি সার প্রয়োগ করায় ধান গাছে পচন সৃষ্টি হয়। এ পচন ও পোকা আক্রমণ কোনো ভয়াবহ রোগ নয় এবং অনুমোদিত কীটনাশক ব্যাবহার করলেই এ আক্রমণ দমন হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আ জা মু আহসান শহিদ সরকার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থাানে রোপা আমন খেতে এ মাজরা পোকা ও পচন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। অনুমোদিত কীটনাশক আক্রান্ত জমিতে ব্যবহার করছে। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকেরা ধান খেতে কীটনাশক ব্যবহার করছে এবং অনেক আক্রান্ত ধান খেত থেকে এ পচন ও মাজড়া পোকা দমন হয়েছে। এতে কৃষকের কোনো দূশ্চিন্তার কারণ নাই বলে তিনি উল্লেখ করেন।