
রংপুরের পীরগঞ্জে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গত অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে উল্লেখিত মন্ত্রণালয় থেকে পীরগঞ্জে প্রায় সোয়া ৬ কোটি টাকা ও ৪০০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দে কাজের স্বচ্ছতার কারণে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও সরকারের একাধিক খাত থেকে পীরগঞ্জের উন্নয়ন খাতে কাবিটা প্রকল্পের জন্য ৬ কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং কাবিখা প্রকল্পের জন্য ৪১৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়। পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে উল্লেখিত বরাদ্দে ৩৫৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাস্তবায়িত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পৃথক ২০টি স্থানে ২ হাজার ৩৭৮ মিটার সিসি রাস্তা নির্মাণ, ১০৩টি পৃথক স্থানে ৮ হাজার ১২৫ মিটার সলিং রাস্তা নির্মাণ, ৪টি পৃথক স্থানে ৪৪৩ মিটার ডব্লিউ বিএম নির্মাণ, ৬টি পৃথক স্থানে ৪২৪ মিটার এইচ বিবি নির্মাণ, ২১টি পৃথক স্থানে ৯৫৮ মিটার গাইড ওয়াল নির্মাণ, ৩টি পৃথক স্থানে ২৫৬ মিটার ইউড্রেন নির্মাণ ও ১০টি পৃথক স্থানে ৫৪ মিটার কালবার্ট নির্মাণ। এছাড়া উল্লেখিত উন্নয়ন ছাড়াও ১৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির ও বিভিন্ন সংগঠনের অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়েছে।
এদিকে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বচ্ছতার ব্যাপারে না প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মতে বিগত কয়েক বছরে প্রকল্পের কাজের ব্যাপারে এতো স্বচ্ছতা ছিল না। সংশ্লিষ্ট তৎকালীন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অনেক ক্ষেত্রে কাজের মান না দেখেই প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দকৃত বিল ছাড় করতেন। কিন্তু এবারে তারা সে সুযোগ পাননি। বর্তমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা স্বয়ং কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে প্রতিটি প্রকল্প সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে প্রকল্পের টাকা-খাদ্য শস্য প্রদান করেছেন। যে কারণে প্রকল্পের কাজের গুণগতমান পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি সামগ্রিক কাজের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এবারে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক তদবির ছিল না। যে কারণে দীর্ঘ সময় ধরে আমি স্বয়ং প্রতিটি প্রকল্পের কাজের মান যাচাই সাপেক্ষে বিল প্রদান করা হয়েছে। একাধিক সময় সহকারী পরিচালক সামছুল আলম একাধিক প্রকল্পের কাজের মান তদন্ত করেছেন। তবে এতে অনেক প্রকল্প চেয়ারম্যান অসন্তষ্ট হয়েছেন। তার পরেও পরবর্তী সময়েও প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ বুঝে নেওয়ার সাধ্যমত চেষ্টা করব। তবে এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা দরকার। পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে বলেন, এবারের প্রকল্পে পাঁকাকরণের কাজ বেশি হয়েছে। আমি বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেছি এবং এবারের কাজ বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে।