ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চিকিৎসক ও ভবন সংকটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মোরেলগঞ্জ
চিকিৎসক ও ভবন সংকটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভাণ্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নজিরবিহীন চিকিৎসক ও ভবন সংকট চরমে পৌঁছেছে। ফলে চিকিৎসাসেবা প্রায় অচলাবস্থার মুখে পড়েছে। প্রতিদিন রোগীর চাপ বাড়লেও পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও অবকাঠামো না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এতে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০২২ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও এখনও ১৯ শয্যার ভবনে প্রশাসনিক ওয়ার্ড, আউটডোর, ইনডোর, শিশু, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড গাদাগাদি করে চলছে। পুরনো ৩১ শয্যার ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণকাজ অর্থের অভাবে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে উন্নত ও দ্রুত চিকিৎসাসেবা পাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে চিকিৎসকের ৪২টি পদের মধ্যে ৩৩টি শূন্য। কাগজে-কলমে ৯ জন চিকিৎসক থাকলেও দুজনকে অন্য হাসপাতালে সংযুক্তি দেওয়া হয়েছে, একজন ডেন্টাল সার্জন ও একজন ইউনানি চিকিৎসক। মাত্র পাঁচজন চিকিৎসক দিয়েই ৪ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা চলছে। অনুমোদিত ২৭৫টি পদের মধ্যে বর্তমানে ১৩৩টি পদ শূন্য রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকারা জানান, সীমিত জনবল নিয়ে প্রতিদিন ৪০০-এর বেশি বহির্বিভাগের রোগী ও গড়ে ৭০-৮০ জন ভর্তি রোগীকে সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১১টি পদের একটিও পূরণ হয়নি। মেডিকেল অফিসারের ১৪টি পদের বিপরীতে মাত্র তিনজন কর্মরত আছেন।

স্থানীয় রোগীরা অভিযোগ করেন, সকালে লাইন ধরে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও ডাক্তার পাওয়া যায় না। অনেক সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেরিতে আসায় চিকিৎসা পেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বাধ্য হয়ে তাদেরকে বেসরকারি ক্লিনিক ও শহরের বড় হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. নাদিরুজ্জামান আকাশ বলেন, ‘অপ্রতুল চিকিৎসক দিয়ে ভর্তি রোগীদের পাশাপাশি বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ সামলাতে হচ্ছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর চাপও বাড়ে। সংকটের কারণে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।’ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত দুই মাসে তিনবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিকিৎসক চেয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও প্রয়োজনীয় পদায়ন হয়নি।’

সিভিল সার্জন ডা. আ স মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চিকিৎসক সংকট নিরসনে আমরা নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নতুন চিকিৎসক নিয়োগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা পুরোপুরি সমাধান সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত