
চিকিৎসকসহ জনবল সংকটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা চরমভাবে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার পৌনে চার লাখ মানুষের মধ্যে বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির।
আর্থিক সংকটে থাকা স্থানীয় মানুষের ভরসা সোনাগাজী ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এই হাসপাতালে ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে আছেন মাত্র ৮ জন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৫০০-৫৫০ জন রোগী চিকিৎসা নেন। আন্ত:বিভাগে প্রতিদিন ৬০-৭০ জন রেগী ভর্তি হন। জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও ভোগান্তির শিকার হন। দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে সেবা নিতে হয় রোগীদের। সাতজন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে আছেন মাত্র তিন জন। ১১ জন কনসালটেন্টের মধ্যে আছেন মাত্র তিনজন। কনসালটেন্ট সার্জারি, মেডিসিন, শিশু, অর্থোপেডিক্স, কার্ডিওলজি, চক্ষু, নাক, কান, গলা, চর্ম ও যৌন এবং অলটারনেটিভ মেডিকেল অফিসার পদে নেই কোনো চিকিৎসক। এছাড়া চতুর্থ শ্রেণির ৩৫টি পদের মধ্যে আছেন মাত্র ৮ জন। এরমধ্যে ছয়টি ওয়ার্ড বয়, তিনজন আয়া, সুইপার পদে ছয়জনের পদে আছেন মাত্র দুই জন তাও একজন রয়েছেন ছুটিতে। যার ফলে একজনই রয়েছেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত। এতে নোংরা ও অপরিষ্কার পরিবেশ এখন হাসপাতালটির নিত্যদিনের সঙ্গী উপজেলার অসহায় মানুষের স্বাস্থ্য সেবার অন্যতম অবলম্বন হলেও হাসপাতালটির রোগ নির্ণয়ের প্রায় সব মেশিন নষ্ট। ফলে গরিব-দুঃস্থ রোগীদের পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির সেবাগ্রহীতারাও এড়িয়ে চলেন সরকারি প্রতিষ্ঠানটিকে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে মূল্যবান এক্স-রে, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন রয়েছে। কিন্তু সবগুলোই নষ্ট। বিকল হয়ে গেছে জেনারেটর মেশিনটিও। হাসপাতালে আসা রোগীদের অভিযোগ, কেবলমাত্র প্রাথমিক সেবা মিললেও তাদের মধ্যেই অনেককেই পাঠানো হয় জেলা শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। তাছাড়া প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হাসপাতালের মেশিন ব্যবহারের কথা থাকলেও এসব নষ্ট হওয়ায় ভোগান্তি তো রয়েছেই। নির্মাণাধীন নতুন ভবনের কাজ রেখে ঠিকাদার কাজ রেখে পালিয়ে যাওয়ার এক বছরেও কাজ শুরু হয়নি নতুন ভবনটির কাজ। যার ফলে হাসপাতালের বারান্দায় ও মেঝেতে নোংরা পরিবেশে রোগী বা তার স্বজনরা অবস্থান করছেন।
সাফিয়া খাতুন নামে এ রোগী জানান, হাসপাতালের প্রায় সবকিছুই নষ্ট থাকায় তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এতে আর্থিকভাবেও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তারা। এ ছাড়া, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকজনের প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি ও কমিশন বাণিজ্যের কারণে চরম বিরক্ত রোগী বা তাদের স্বজনরা। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত চিকিৎসকসহ জনবল সংকট নিরসনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন জানিয়েছি।