ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দাউদকান্দি পৌরসভায় নেই ডাম্পিং স্টেশন

যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে আবর্জনা
দাউদকান্দি পৌরসভায় নেই ডাম্পিং স্টেশন

কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি বর্জ্য পরিশোধনাগার কিংবা ডাম্পিং স্টেশন। নির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থা না থাকায় শহরের বিভিন্ন স্থান, নদীর পাড়ে, মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এসব ময়লার ভাগাড় থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। যা পরিবেশ দূষণ, রোগবালাই এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। তার সঙ্গে নদীতেও বাড়ছে দূষণ। ময়লা-আবর্জনার এমন অসহনীয় দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরবাসী।

জানা যায়, ১৯৯৫ সালে দাউদকান্দি পৌরসভা গঠন হয়েছে। এখন এটি দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভা। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি বর্জ্য পরিশোধনাগার কিংবা ডাম্পিং স্টেশন। প্রায় ১২ দশমিক ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভায় ৬২ হাজার মানুষের বসবাস। পৌর এলাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০ টন মানব বর্জ্য তৈরি হয়। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান কিংবা ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে, কখনও গোমতী নদীতে, সড়কের গলির মোড়ে ও পরিত্যক্ত উন্মুক্ত স্থানে ফেলা হচ্ছে প্রতিদিনের ময়লা। উন্মুক্ত স্থানের এসব ময়লার স্তূপে খাবারের সন্ধানে কুকুর, বিড়াল, শালিক, কাক, মোরগ-মুরগি ঘাঁটাঘাঁটি করে রাস্তার ওপর ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিচ্ছে। ফলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। বাতাসে ছড়াচ্ছে রোগজীবাণু। বাড়ছে জনদুর্ভোগ।

সরেজমিনে দাউদকান্দি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন শহরের ঘরোয়া ও বাণিজ্যিক বর্জ্য পৌর বাজারে গোমতী নদীর পাড়ে, খালের মধ্যে, খোলা জায়গা, অলিগলিতে ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা-আবর্জনা। মহাসড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা বর্জ্য আগুনে পোড়ানোর কারণে সৃষ্ট ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে মহাসড়কে যাওয়া আসার পথে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ বাড়িয়েছে।

এত পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড দোনারচর গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, পৌরসভায় বর্জ্য শোধনাগার না থাকায় ময়লা-আর্বজনা নদী ও উন্মুক্ত স্থানে ফেলা হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি নদীও দূষণ হচ্ছে। পৌর নাগরিকদের জীবনমান উন্নত করার জন্য দ্রুত একটি বর্জ্য শোধনাগার তৈরি করা দরকার।

দাউদকান্দি পৌর বাজার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সমাজ সেবক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নূর মোহাম্মদ সেলিম সরকার বলেন, অতীতে দেখেছি প্রতিটি ওয়ার্ডে ছোট ছোট ডাস্টবিন ছিল। এখন সেটি নেই। যত্রতত্র ময়লা ফেলার কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনা থেকে রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। পৌর প্রশাসককে দ্রুত বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। দাউদকান্দি পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিদিন ২৫ টন ময়লা বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করি। নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় মহাসড়কের পাশে ফেলতে হচ্ছে। ডাম্পিং স্টেশন করতে প্রায় দুই একর জমির প্রয়োজন। জমি সংগ্রহ করতে না পারায় সেটা করা যাচ্ছে না।

দাউদকান্দি পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই জায়গা সংকটের কারণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিভাগে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় একটি প্রকল্পের স্থান প্রস্তাব করে অনুমোদনের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন ও বরাদ্দ পাওয়া গেলে ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত