
হিমালয়ের পাদদেশঘেঁষা জেলা নীলফামারীতে তীব্র শীতের দাপট বেড়েই চলেছে। কয়েকদিন ধরে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে পুরো জেলা। ফলে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ, দিনমজুর ও কৃষি শ্রমিকরা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস নীলফামারী জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ১৩ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠলেও কনকনে বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে জেলায় তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে এবং আগামী কয়েকদিনে শীত আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভোরের আলো ফোটার পরও চারপাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে। দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় দিনের বেলাতেও মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস ও অন্যান্য যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। রাতভর কুয়াশা ঝরার পর এর প্রভাব সকাল গড়িয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত থাকছে।
সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের শাহ্ পাড়া এলাকার কৃষক ছপিয়ার রহমান বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই হিমেল বাতাস আর কুয়াশা শুরু হয়। ভোরে মাঠে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বেড়েছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া, হাঁপানি, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, শীতের প্রভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে শীতবস্ত্রের বাজার। নীলফামারী হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী আলহাজ্ব বাবু ইসলাম জানান, কয়েকদিনের টানা শীতে শীতবস্ত্রের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে গেছে। এদিকে শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, উত্তরের এই জেলায় শীতের এই ধারা আরও কয়েক সপ্তাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।