ঢাকা শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ইছামতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি

ইছামতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি

দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নের তারকশাহার হাট এলাকার ইছামতি নদীর ওপরে ২৫০ ফুট বাঁশের সাঁকো। দুই ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষের একটি সেতুর অভাব দীর্ঘদিনের। প্রতিটি নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও স্বাধীনতার ৫৫ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এতে কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে নদী পারাপারে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় কৃষকরা। প্রতিদিন বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ সাঁকো দিয়ে এলাকার বেকিপুল বাজার, কিষ্টহরি বাজার, চাম্পাতলী বাজার, বিন্যাকুড়ির হাট, তারকশাহার হাট, মডেল স্কুল, ইছামতি ডিগ্রি কলেজ, ইছামতি ফাজিল মাদরাসা, রানীরবন্দর সুইয়ারী বাজারসহ সাতনালা ও আকোডিহি দুই ইউনিয়ন প্রায় ১০ হাজার মানুষকে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংকে লেনদেন, বাজারঘাটসহ প্রতিটি কাজের জন্য চলাচল করতে হয়। এই জনপদের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। অঞ্চলটি সবজির এলাকা হিসেবে খ্যাত। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় উৎপাদিত সবজির ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। সেতু না থাকায় সাঁকো উপর দিয়ে কোন মালামাল পড়াপাড় করা যায় না। দূর দিয়ে ঘুরে কৃষি পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়, এতে কৃষকদের উৎপাদন খরচ বাড়ে। এলাকার মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবি ইছামতী নদীর উপর একটি সেতু হলে দুই ই্উনিয়নের মানুষের কষ্ট দূর হবে।

জোত সাতনালা গ্রামের কৃষক হাসান আলী বলেন, নদী পার হয়ে আমার সব জমি ধান কাটছি; কিন্তু নদীর উপর বাঁশের সাঁকো থাকায় ভ্যানে করে ধান আনতে পারছি না বাসায়। বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার ঘুড়ে ধান বাসায় নিয়ে আসেত হচ্ছে। প্রতিটি নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা বলে ভোটদেন নির্বাচনের পরে এখোনে ব্রিজ হবে। কত নির্বাচন গেল; কিন্তু ব্রিজখান আর হলো না। নদীর দুইপাড়ে মানুষের যে ভোগান্তি দূর করতে আর কত বছর সময় লাগবে জনপ্রতিনিধিরিই তা ভালো জানেন। ইছামতি ফাজিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, আমরা খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল বাঁশের সাঁকো দিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়া আসা করি। শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি থাকে না, তখন নদী হাটে পাড় হওয়া যায়। বিশেষ করে আমাদের ভোগান্তি হয় বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে আসা কচুরিপানা সাঁকোর নিচে আটকে গেলে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যায়। ফলে আমাদের দুই থেকে তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে কলেজ মোড় হয়ে বিকল্প সেতু ব্যবহার করে মাদ্রাসায় যাওয়া আসা করার লাগে। আমরা চাই সরকার যেন ইছমতি নদীর উপরে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ করে দেয়।

সাতনালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক শাহ্ ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, সাঁকোটির দুই পাশে স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও হাটবাজার রয়েছে। প্রতিদিন কৃষক ও শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ এই সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করেন। ভুক্তভোগী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি আশা করছি, দ্রুত কতৃপক্ষ এখানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত