
নবীনগরে কৃষি জমির উৎপাদন বাড়াতে মাটির অম্লতা কমানোর লক্ষ্যে ডলোমাইট চুন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের ২০ বিঘা জমিতে এ চুন প্রয়োগ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো নবীনগরের মাটিতেও অম্লতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত এক বছরে উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক জমিতে মাটি পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, অধিকাংশ জমির পিএইচ মাত্রা ৪.৯ থেকে ৫.৫-এর মধ্যে, যা ফসল উৎপাদনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
মাটির অম্লতা ও ক্ষারীয়তা পরিমাপ করা হয় পিএইচ স্কেলে, যার মান ০ থেকে ১৪। পিএইচ ৭-এর নিচে হলে মাটি অম্লীয় এবং ৭-এর ওপরে হলে ক্ষারীয় হিসেবে বিবেচিত হয়। ফসলের জন্য আদর্শ পিএইচ মাত্রা ৫.৫ থেকে ৭.৫। এ মাত্রার নিচে নেমে গেলে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারে না, ফলে ফলন কমে যায়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, মাটির পিএইচ মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ডলোমাইট চুন কার্যকর। সে অনুযায়ী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সুপারিশে প্রতি শতাংশ জমিতে ৪ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান,উপযুক্ত পিএইচ মাত্রা বজায় থাকলে গাছ সহজেই নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ, জিঙ্ক, আয়রন ও বোরনের মতো পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে। পাশাপাশি উপকারী অনুজীব আজোটোব্যাক্টর, রাইজোবিয়াম ও ট্রাইকোডার্মা ভালোভাবে কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, ডলোমাইট চুনে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম গাছের শিকড় মজবুত করে এবং পাতার রং উন্নত করে।
এতে ধান, সবজি ও ফল বাগানে উৎপাদন বাড়ে। পিএইচ স্বাভাবিক থাকলে ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশসহ অন্যান্য সারও অধিক কার্যকরভাবে কাজ করে, ফলে সার অপচয় কমে। কৃষি বিভাগ জানায়, চুন প্রয়োগের আগে এবং ফসল উত্তোলনের পর পুনরায় মাটি পরীক্ষা করে পিএইচ মাত্রা ও ফলনের পরিবর্তন মূল্যায়ন করা হবে। ফলাফল ইতিবাচক হলে উপজেলাজুড়ে কৃষক পর্যায়ে এ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।