
আবারও মনের ক্ষোভের একাংশ প্রকাশ করলেন দেশের নন্দিত গায়িকা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেবী নাজনীন। গত রবিবার রাতে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে কালচারাল জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশ (সিজেএফবি) আয়োজিত পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ডের ২৪তম আসর উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত হয়ে এই সংগীতশিল্পী বলেন, ‘গত ১৭ বছর আমি কোনো সুযোগ পাইনি, শোবিজ অঙ্গন কি সেটা দেখিনি, কাজ করতে পারিনি। যখন এসেছি দেখি- ইন্ডাস্ট্রি আর নেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কোথায় কাজ করব? কী হবে? এসব নিয়ে সংশয়ে ছিলাম, আজও আছি।’
ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কাজ করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলেছেন ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ খ্যাত শিল্পী বেবী নাজনীন। অনুষ্ঠানের মঞ্চে কথা বলতে গিয়ে শুরুতেই সদ্যপ্রয়াত কিংবদন্তি লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে স্মরণ করেন তিনি। তার জন্য সবার কাছে দোয়া চান। একই সঙ্গে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এ সময় দেশের সামগ্রিক অবস্থা সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে বেবী নাজনীন বলেন, দেশের সামগ্রিক অবস্থায় নানা সংশয় তৈরি হয়েছে মানুষের মনে, সংশয় তৈরি হয়েছে আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও। সার্বিক অবস্থায় দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রগুলো।
মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি নেই, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নেই- সংস্কৃতির এই প্রধান দুই মাধ্যম যেভাবে বিলুপ্তের পথে, তাতে এই সেক্টরে যারা কাজ করতে আসবে তাদের পথ কতটা সুগম হবে তা ভাবতে হবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, যেহেতু এসব ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, তাই এখন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা সময়ের দাবি বলে মনে করছি। কিছু মাধ্যমের অনুদান আমাদের অনান্য সাংস্কৃতিক মাধ্যমের জন্য যথেষ্ট নয়।
নতুন পরিবেশে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধের আহবার জানিয়ে বেবী নাজনীন বলেন, যারা জুলাই-আগস্টে প্রয়াত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। সেইসঙ্গে আমরা যে নতুন পরিবেশ পেয়েছি এই পরিবেশে দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।
একটা বিষয় আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ- একটা দেশ সমৃদ্ধ হয় তখন যখন একটা দেশে ফিন্যান্সিয়াল এবং কালচারাল ফ্রিডম থাকে। এই দুটির ফ্রিডম যখন থাকবে তখন সেই দেশের উন্নয়ন কেউ ঠেকাতে পারবে না। ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করব।