জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, মুজিববাদীরা আজ বাধা দিয়েছে। আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের সময় বলেছিলাম, ‘বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই। সেই লড়াইয়ে জিততে হবে।’ আজ আবারও বাধা দিয়েছে। আর লড়াইয়ে আমরা জিতবো। এর জবাব আমরা দেবো। গতকাল বুধবার শহরের পৌরপার্ক এলাকার এনসিপির সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, যদি আজ বাধা দেওয়া না হতো তাহলে গোপালগঞ্জের সাধারণ জনতা এখানে লোকে লোকারণ্য হতো। আমরা এখানে গোপালগঞ্জের নাম বদলাতে আসিনি। আমরা এসেছি শান্তি এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। তিনি বলেন, আপনারা যারা দূর থেকে শুনছেন, আমরা আজ গোপালগঞ্জ এসেছিলাম দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার কর্মসূচিতে। আমরা এসেছি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে, এই নতুন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জবাসীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। শান্তি এবং দেশ গড়ার আহ্বান নিয়ে গোপালগঞ্জ এসেছি। এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, যারা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে রয়েছেন, নতুন বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছেন আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এই গোপালগঞ্জ যেন মুজিববাদীদের আশ্রয়কেন্দ্র না হয়ে ওঠে। পুলিশ প্রশাসন যদি ব্যর্থ হয় আপনাদের রক্ষা করার দায়িত্ব, গোপালগঞ্জকে রক্ষা করার দায়িত্ব, বাংলাদেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।
গোপালগঞ্জে হামলার পরপরই সেখানে উপস্থিত হন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। মঞ্চে উঠেই দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ’ স্লোগানে সমাবেশস্থল উত্তাল হয়ে ওঠে। সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘হাসিনা আপনাদের ছেড়ে পালিয়ে গেছে। উনি গোপালগঞ্জকে ধারণ করলে ভারত না গিয়ে গোপালগঞ্জে আসতেন। ওনার মতো স্বার্থপর, উনি ওনার ফ্যামিলির মানুষ ছাড়া গোপালগঞ্জবাসীর কথা একবারও ভাবেন নাই। গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের হয়ে উঠতে পারেনি। আপনারা বাংলাদেশের হয়ে উঠুন। আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে গোপালগঞ্জকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। আমরা আহ্বান জানাব, জালিমের শাসন থেকে মুক্ত করেছি।’ স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তার দেওয়া ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ’ স্লোগানে পৌর পার্কের সমাবেশস্থল প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। তিনি আরও স্লোগান দেন- ‘মুজিববাদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও; ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম লিখেছেন, গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের উপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরবো, না হয় ফিরবো না। সারজিস আলম বলেন, সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।