ঢাকা বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গৃহযুদ্ধের নতুন আশঙ্কা

দক্ষিণ সুদানে হাসপাতালে বোমা হামলা

নিহত ৭
দক্ষিণ সুদানে হাসপাতালে বোমা হামলা

দক্ষিণ সুদানের একটি হাসপাতালে বোমা হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা দাতব্য সংস্থা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’ (এমএসএফ)। বিশ্বের সবচেয়ে নবীন রাষ্ট্রটিতে আবারও সর্বাত্মক গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এমএসএফ এক বিবৃতিতে দক্ষিণ সুদানের উত্তরাঞ্চলীয় ওল্ড ফ্যাংগাক এলাকায় তাদের হাসপাতালে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে বোমা হামলার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। হামলায় ওই অঞ্চলের সবশেষ কার্যকর হাসপাতাল ও ওষুধের দোকান ধ্বংস হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমএসএফ বোমা হামলা বন্ধের আহ্বান জানায়। পোস্টে সংস্থাটি লিখেছে, ‘বোমা হামলা বন্ধ করুন। বেসামরিক মানুষদের রক্ষা করুন। স্বাস্থ্যসেবা খাতকে রক্ষা করুন।’ এ হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলেও উল্লেখ করেছে এমএসএফ। হাসপাতাল লক্ষ্য করে কেন হামলা চালানো হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, এ বিষয়ে কথা বলতে দক্ষিণ সুদানের সেনাবাহিনীর কোনো মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। দক্ষিণ সুদানে এমএসএফের প্রধান মামান মুস্তাফা রাজধানী জুবা থেকে আল-জাজিরাকে বলেন, অস্ত্রশস্ত্রসজ্জিত দুটি হেলিকপ্টার থেকে হাসপাতালের ওপর ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তার মাঠপর্যায়ের দল। মুস্তাফা বলেন, হেলিকপ্টার দুটি হাসপাতাল ও চিকিৎসাসামগ্রী লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপের পর ওল্ড ফ্যাংগাক শহরে টানা গুলিবর্ষণ করেছে। মুস্তাফা আরও বলেন, ‘বেসামরিক জনগণ ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ ও বিপর্যয়কর- আমরা হতবাক হয়ে গেছি। হাসপাতালটি ২০১৪ সাল থেকে, অর্থাৎ ১০ বছর ধরে সেখানে ছিল।’

গৃহযুদ্ধের নতুন আশঙ্কা : জাতিসংঘ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সতর্ক করে বলেছে, ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই অস্থিরতায় জর্জরিত দক্ষিণ সুদান। দেশটির আবারও সর্বাত্মক গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে আছে। প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাশারের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তি ভেঙে পড়ার কারণে গত কয়েক মাসে দেশে নতুন করে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ সুদানের প্রধান দুই জাতিগোষ্ঠী ডিংকা ও নুয়ের-এর প্রতিনিধিত্ব করেন কির ও মাশার। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ হয়। এতে প্রায় চার লাখ মানুষ নিহত হন। ২০১৮ সালের শান্তিচুক্তির পর তারা একটি ঐক্যের সরকার গঠন করেছিল।

এবার আবারও কির ও মাশারের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। গত মার্চ মাস থেকে মাশার গৃহবন্দি। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে এমএসএফের হাসপাতালের ওপর হামলা হয়েছে, সেই ওল্ড ফ্যাংগাক হচ্ছে ফ্যাংগাক কাউন্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি জংগলেই রাজ্যের অন্তর্গত, যা মূলত নুয়ের জাতিগোষ্ঠী-অধ্যুষিত এলাকা ও ঐতিহাসিকভাবে মাশারের নেতৃত্বাধীন সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-ইন-অপজিশনের (এসপিএলএমণ্ডআইও) ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। নাইরোবি থেকে আল-জাজিরার ক্যাথরিন সোই জানিয়েছেন, তিনি ফ্যাংগাক কাউন্টির কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন, যিনি এ হামলার জন্য সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন। ওই কর্মকর্তা এসপিএলএমণ্ডআইও-এর ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। ওই কমিশনার আল জাজিরাকে বলেন, ‘শুধু সেনাবাহিনীই এ ধরনের হামলা চালানোর সামর্থ্য রাখে।’ এদিকে ক্যাথরিন বলেন, ‘আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা বলেছেন...ওই বিমান ছিল সরকার পরিচালিত।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত