ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মহাসড়কে পশুর হাট যানজট-ভোগান্তি

* শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কক্সবাজারের ৯৪ পশুর হাট * হাটবাজার ইজারা নীতিমালা মানছে অনেকেই
মহাসড়কে পশুর হাট যানজট-ভোগান্তি

কক্সবাজারে মহাসড়কের উপর পশুর হাটের কারণে ঈদে ঘরমুখী মানুষের মাঝে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। ফলে এক ঘণ্টার পথে লাগছে কয়েক ঘণ্টা। সড়কের উপর পশুর হাটগুলোতে যানজট নিরসনে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যরা। অপরদিকে মহাসড়কের পশুর হাট বসানোয় খোদ সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে হাটবাজার ইজারার নীতিমালা মানছে না অনেকেই। স্ব-স্ব উপজেলার বাজার মনিটরিংয়ে গাফিলতির কারণে ইজারাদাররা তাদের ইচ্ছামতো টোল আদায় করছে।

গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া, কাটির মাথা ও মরিচ্যা, ঈদগাঁও, কলঘর এলাকায় মহাসড়কের উপর পশুর হাট বসানোর কারণে চরম যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার সড়কের উভয় পাশে আটকা পড়েছে শত শত যানবাহন।

সরেজমিন দেখা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ উখিয়ার মরিচ্যা পশুর হাটটি মহাসড়কের উপর। প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে টেকনাফ-কক্সবাজারমুখী শত শত যানবাহন আটকা পড়তে দেখা যায়। এমনকি বাজারটিতে হেঁটে চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। জানতে চাইলে সিএনজি চালক আমির হোসেন বলেন, ‘বিকালে ভাড়া নিয়ে উখিয়া যাচ্ছিলাম। মরিচ্যায় পশুর হাটটি মহাসড়কের উপর হওয়ায় দীর্ঘ ২ ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ি। শুধু যাত্রীবাহী যানবাহন নয়, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও আটকা পড়েছে।’ উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরীর বলেন, ‘আপাততে যানজট নিরসনে কাজ করতে গ্রাম পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহাসড়ক থেকে মরিচ্যার পশুর হাটটি সরানোর জন্য বাজারের আশপাশে খাস জমি খোঁজা হচ্ছে।’ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তথ্য সূত্র বলছে, কক্সবাজার জেলায় ৯৪টি পশুর হাট বসছে। এরমধ্যে স্থায়ী বাজার ৪৮টি, কোরবানি উপলক্ষে ৪৬টি। উপজেলা ভিত্তিক অনুমোদিত বাজারের সংখ্যা হলো সদরে ১৪টি, রামুতে ১৩টি, চকরিয়ায় ১৬টি, পেকুয়ায় ৮টি, উখিয়ায় ৮টি, টেকনাফে ৭টি, মহেশখালীতে ৬টি, কুতুবদিয়ায় ৬টি রয়েছে। এদিকে কক্সবাজার সদরে ১৪টি কোরবানির পশুর হাট ইজারা হলেও প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে পশুর হাট বসছে ৭টি। এরইমধ্যে বাজারগুলো বিক্রি শুরু হয়েছে। অনেক বাজারে মিয়ানমারের গরু-মহিষে সয়লাব হতে দেখা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব বাজারের উন্নয়ন তহবিলে বছরের পর বছর অলস পড়ে আছে লাখ লাখ টাকা। অর্থ পড়ে থাকলেও পশুর হাট সম্প্রসারণ বা নতুন স্থান নির্ধারণে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদগাঁও বাসস্টেশনের উত্তর পাশ দিয়ে ঈদগড়-বাইশারী সড়ক। এই সড়ক দিয়ে লামা-নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। চলে শত শত যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী পরিবহন। স্থানীয়রা জানান, প্রতি শনি-মঙ্গলবার বসে পশুর হাট। হাটের ভেতরে জায়গা স্বল্পতার জন্য প্রায় ১ হাজার মিটার সড়ক দখল করে চলে পশু বেচাকেনা। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কের উপর পশু রেখে এমনভাবে পথ আটকানো থাকে, যা দেখে যে কারও মনে হতে পারে এটি কোনো সড়ক নয়, বরং পশুর হাট। এ অবস্থায় যানবাহন চলাচলে যেমন ভোগান্তি বাড়ছে, তেমনি দুর্ভোগ বাড়ছে স্থানীয়দের। দীর্ঘদিন ধরে যানবাহন চালক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের এমন দুর্বিষহ অবস্থার কেন অবসান হচ্ছে না, সেটি জানেন না কেউ। জানা গেছে, ঈদগাঁও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের মধ্যে ঈদগাঁও পশুর হাটের ইজারা মূল্য সর্বোচ্চ। অথচ গরু-ছাগলের আলাদা কোনো বাজারের ব্যবস্থা না করে দীর্ঘদিন ধরে দায়সারাভাবে সড়কেই বেচাকেনা চলছে। সরেজমিন দেখা গেছে, সপ্তাহের মঙ্গলবার মহাসড়কে বসেছে পশুর হাট। হাটের দিন গরুর বর্জ্যে সড়কজুড়ে তৈরি হয় এক নোংরা পরিবেশ। হাটবারে ব্যস্ততম এই মহাসড়কে ভিড় বাড়ে যানবাহনের।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত