
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম বলেছেন, সংগঠনটিকে নিরস্ত্রীকরণের উদ্যোগ আসলে একটি ইসরায়েলি-মার্কিন পরিকল্পনা। সেইসঙ্গে ইসরায়েল গত বছর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মানছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। খবর আল আরাবিয়ার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র চাপ এবং ইসরায়েলের আরও বড় হামলার আশঙ্কার মধ্যে লেবাননের সেনাবাহিনী বছরের শেষ নাগাদ লিটানি নদীর দক্ষিণাঞ্চল থেকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণের কাজ শেষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই নদীটি ইসরায়েল সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এরপর দেশটির বাকি অংশে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীকে নিরস্ত্রীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে গত রোববার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে নাঈম কাসেম বলেন, ‘নিরস্ত্রীকরণ একটি ইসরায়েলি-মার্কিন পরিকল্পনা।’
তিনি বলেন, ‘যখন ইসরায়েল আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে এবং আমেরিকা লেবাননের ওপর নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দিয়ে তাকে শক্তিহীন করছে, তখন একতরফাভাবে অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ দাবি করার অর্থ হলো আপনি লেবাননের স্বার্থে নয়, বরং ইসরায়েলের স্বার্থেই কাজ করছেন।’ ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাত বন্ধে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল, তা উপেক্ষা করে ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পাঁচটি কৌশলগত এলাকায় সেনা মোতায়েন বজায় রেখেছে। চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহকে লিটানি নদীর উত্তরে তাদের বাহিনী সরিয়ে নিতে এবং দক্ষিণাঞ্চলে থাকা সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছিল। তবে ইসরায়েল লেবাননের সেনাবাহিনীর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং হিজবুল্লাহ পুনরায় অস্ত্র সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ করেছে। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ তাদের অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে।
কাসেম বলেন, ‘লিটানি নদীর দক্ষিণে লেবাননের সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি তখনই প্রযোজ্য ছিল, যখন ইসরায়েল তার প্রতিশ্রুতি মানত- আগ্রাসন বন্ধ করত, সেনা প্রত্যাহার করত, বন্দিদের মুক্তি দিত এবং পুনর্গঠন শুরু হতো।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু ইসরায়েল চুক্তির কোনো ধাপই বাস্তবায়ন করেনি, তাই ইসরায়েল তাদের দায়িত্ব পালন না করা পর্যন্ত লেবাননের পক্ষ থেকে কোনো পর্যায়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই।’ এদিকে লেবাননের সেনাপ্রধান রোদলফ হায়কাল গত মঙ্গলবার এক বৈঠকে বলেন, ‘সেনাবাহিনী তাদের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ শেষ করার পথে রয়েছে।’ তিনি জানান, নিরস্ত্রীকরণের পরবর্তী ধাপগুলোও সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।