ঢাকা বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইসরায়েলকে চার দিনের আলটিমেটাম

ইসরায়েলকে চার দিনের আলটিমেটাম

ইয়েমেনের হুথি আনসার-আল্লাহ আন্দোলনের নেতা আব্দুল মালিক আল-হুথি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আগামী চার দিনের মধ্যে গাজায় মানবিক ত্রাণের বহর প্রবেশের অনুমতি না দিলে লোহিত সাগরে ইসরায়েলবিরোধী সামরিক অভিযান আবার শুরু করা হবে। গত ১ মার্চ গাজা যুদ্ধবিরতির ৪২ দিনব্যাপী প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপের ব্যাপারে প্রাথমিক সমঝোতায় যা বলা হয়েছিল তা উল্টে দিয়ে ইসরায়েল নতুন নতুন দাবি উত্থাপন করায় তা মেনে নেয়নি হামাস। ফলে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ এখনও শুরু করা যায়নি। কিন্তু তেলআবিব তার আবদার মেনে নিতে হামাসকে বাধ্য করার জন্য গাজা উপত্যকায় মানবিক ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় আব্দুল মালিক আল-হুথি শুক্রবার রাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তেলআবিবকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, চার দিনের মধ্যে গাজার প্রবেশ পথগুলো খুলে না দিলে লোহিত সাগর দিয়ে ইসরায়েলের কোনো জাহাজ চলতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে এই উপত্যকায় আবার দুর্ভিক্ষ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা ইয়েমেন চেয়ে চেয়ে দেখবে না। ইয়েমেনের হুথি নেতা বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মারাত্মক গড়িমসি করছে। তিনি বলেন, গাজাবাসীর খাবার আটকে দেয়ার পাশাপাশি আহত ফিলিস্তিনিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজার বাইরে যেতেও বাধা দিচ্ছে তেলআবিব, যা গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। হুথি নেতা আরো বলেন, ইসরায়েল আবার গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বাস্তবায়ন করতে চায়, যা কোনো অবস্থায় সহ্য করা হবে না।

আনসার-আল্লাহর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল হামাস

গাজায় মানবিক সহায়তার ওপর আরোপ করা অবরোধ প্রত্যাহারে আনসার-আল্লাহ ইসরায়েলকে চার দিনের যে আলটিমেটাম দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। এক বিবৃতিতে গাজার এই শাসকদল ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি আনসার-আল্লাহ এবং ইয়েমেনি জনগণের দীর্ঘদিনের সমর্থনের প্রশংসা করে বলেন, ‘এই সাহসী সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনের সঙ্গে ভ্রাতৃপ্রতীম ইয়েমেনি জনগণের গভীর বন্ধনকে প্রতিফলিত করে।’ বিবৃতিতে গাজা উপত্যকায় গত ১৫ মাস ধরে চলা গণহত্যার বিরুদ্ধে আনসার-আল্লাহ এবং সাধারণ ইয়েমেনিদের অবিচল অবস্থানের কথা স্মরণ করা হয়। বিবৃতিতে মানবিক সহায়তায় ইসরায়েলি বাধা এবং ক্রসিং বন্ধ রাখার বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে আরব ও ইসলামি দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

উচ্চ সতর্কতায় হামাসের আল-কাসসাম

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেডস জানিয়েছে, তারা সব রকমের সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত এবং উচ্চ সতর্কতা বজায় রেখেছেন। সংগঠনটি জোর দিয়ে বলেছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার বাহিনী নতুন করে যুদ্ধ শুরু করলে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির নিশ্চয়তা থাকবে না। আল-কাসসামের মুখপাত্র আবু উবাইদা এক ভিডিও বক্তৃতায় এই মন্তব্য করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দখলদার সরকার অস্ত্র ও যুদ্ধের মাধ্যমে যা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে, তা কখনও হুমকি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্জন করা যাবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দেয়ার ঠিক একদিন পর আবু উবাইদা এই মন্তব্য করলেন। ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেছেন, গাজা উপত্যকায় আটক অবশিষ্ট ইসরায়েলি বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি না দিলে ফিলিস্তিনি এবং হামাস যোদ্ধাদের হত্যা করা হবে। আবু উবাইদা বলেন, ‘শত্রুদের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং বিশ্বাসঘাতকতার পরও আমরা বিশ্ব এবং মধ্যস্থতাকারীদের সামনে বন্দি বিনিময় চুক্তি মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যে কোনো অজুহাত বাদ দিয়ে এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষার মাধ্যমে আমাদের জনগণের রক্তপাত ঠেকাতে এবং চুক্তি বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’ ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া তিন ধাপের গাজা যুদ্ধবিরতির আওতায় ইসরায়েল হামাসের দীর্ঘস্থায়ী আলোচনার শর্ত মেনে নেয়। ১ মার্চ শেষ হওয়া প্রথম ধাপে আটটি মৃতদেহসহ মোট ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়, যার বিনিময়ে মুক্তি পান ইসরায়েলি কারাগারে আটক প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি। তবে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে এগিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধের স্থায়ী অবসান, গাজা থেকে দখলদার সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং সব বন্দিকে মুক্তি দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান প্রত্যাখ্যান ইরানের

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিশ্চিত করতে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে ইরানের অটল সমর্থন অব্যাহত থাকবে। গত শুক্রবার সৌদি আরবের জেদ্দায় আয়োজিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ বৈঠকে আরাকচি ফিলিস্তিনের প্রতি ইরানের সমর্থনকে ইস্পাতকঠিন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের ফিলিস্তিনের পাশে থাকার অঙ্গীকার কোনো অবস্থাতেই ম্লান হবে না। ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ধারণা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই কেবল এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।’ দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি কিছু ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি যথাযথ সম্মান দেখিয়ে আরাকচি বলেন, এই সমাধানের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার আদায় হবে না। তিনি ফিলিস্তিনের সব আদিবাসীর প্রতিনিধিত্বকারী একক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পক্ষে ইরানের জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন।

যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বললেন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাৎক্ষণিক নির্দেশে যুদ্ধে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে সেনাদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর এসেছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কান শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে। এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা অনুমান করছেন, যদি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে প্রায় দেড় সপ্তাহের মধ্যে গাজায় আবার যুদ্ধ শুরু হতে পারে। এক কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত উইটকফের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে, তাই অগ্রগতি খুবই কঠিন। উইটকফ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ আরও ছয় সপ্তাহ বাড়িয়ে অর্ধেক জীবিত বন্দি এবং অর্ধেক মরদেহ ফেরত দেয়ার প্রস্তাব করেন। তবে কেউ কেউ দাবি করেছেন, হামাস উইটকফের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেনি। আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হামাস উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণও করেনি বা প্রত্যাখ্যানও করেনি।

ট্রাম্পের হুমকিকে আমলে নিচ্ছেন না গাজাবাসী

আলজাজিরা জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিকে আমলে নিচ্ছেন না গাজাবাসী। গত বুধবার রাতে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন, যদি বন্দিদের আটক রাখা হয়, তবে তারা সবাই মারা যাবে। গাজাবাসীরা বলছেন, তাদের হারানোর আর কিছু নেই। গাজার ৫৯ বছর বয়সি ব্যবসায়ী ইয়াসির আল-শারাফা বলেন, আমি এসব হুমকিকে ভয় পাই না। কারণ, গাজার অনেক মানুষের মতো আমিও মনে করি, আমার হারানোর কিছুই নেই। তিনি বলেন, আগে পোশাক ব্যবসায়ী ছিলাম। আমার বড় দোকান, ছয়তলা বাড়ি, গাড়ি, এবং গাজাসিটির তাল আল-হাওয়ায় গুদাম ছিল। বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রম দিয়ে এসব করেছিলাম। এখন সব ধ্বংস হয়ে গেছে। যেদিকে তাকাই, কেবল ধ্বংস আর দুর্দশা। আমাদের শোকাচ্ছন্ন কিংবা মর্মাহত হওয়ার মতো আর কিছু বাকি আছে কি? আমি এখন শিশুদের জন্য ক্যান্ডি ও ¯œ্যাকস বিক্রি করি। তিনি বলেন, যদি আমরা বন্দিদের হস্তান্তর করি, তবুও কিছুই বদলাবে না। তারা নতুন অজুহাত তৈরি করে যে কোনো সময় যুদ্ধ আবার শুরু করবে। আমরা পুরো বিশ্ব থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি। ৬২ বছর বয়সি জামিলা মাহমুদ ট্রাম্পের কথাগুলো ঠিকমতো শোনেননি, তবে বৃহস্পতিবার সকালে তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য এ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের হুমকিগুলো একটি মানসিক যুদ্ধের অংশ; যার উদ্দেশ্য গাজার মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা। তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন, আমরা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। না আছে ইন্টারনেট, না বিদ্যুৎ, না কোনো যোগাযোগমাধ্যম। প্রতিবারই একটা নতুন পরিকল্পনা আসে- কখনও বলে গাজার মানুষকে জোর করে সরিয়ে দেবে, কখনও বলে ইসরায়েল পুরো গাজার দখল নেবে। আর এখন তারা বন্দিদের কারণে পুরো গাজার জনগণকে হুমকি দিচ্ছে। জামিলা মাহমুদ বলেন, যা কিছুই ঘটুক, তিনি কখনও গাজা ছেড়ে যাবেন না। পরিবারের জন্য অল্প কিছু খাবার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ৬০ বছর বয়সি আইমান আবু দাইয়েহ আলজাজিরাকে বলেন, শুধুমাত্র বন্দিদের হস্তান্তর করলেই ট্রাম্প ও ইসরায়েলের জন্য যুদ্ধ শেষ হবে না। আপাতত যুদ্ধ কিছুটা কম বিধ্বংসী হলেও তারা কোনো না কোনো অজুহাতে আবার আসবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের পাশে কেউ নেই। আমাদের বিষয়ে আরব দেশগুলো তেমন সরব নয়, ইউরোপের দেশগুলোও নীরব।

আল-আকসায় ৯০ হাজার ফিলিস্তিনির জুমা আদায়

ইসরায়েলের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে রমজানের প্রথম জুমা আদায় করেছেন প্রায় ৯০ হাজার ফিলিস্তিনি। গত শুক্রবার তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে এই তথ্য জানান জেরুজালেমের ইসলামিক ওয়াক্?ফের মহাপরিচালক শেখ আজম আল-খতিব। তিনি বলেন, ‘আজ প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি আল-আকসায় জুমার নামাজ আদায় করেছেন।’ ইসরায়েলি পুলিশ এদিন মসজিদ প্রাঙ্গণ এবং জেরুজালেমের ওল্ডসিটিতে ব্যাপক উপস্থিতি বজায় রাখে এবং ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের প্রবেশে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করে। এর আগে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি পুলিশ ঘোষণা করে, পূর্ব জেরুজালেমজুড়ে তিন হাজার অফিসার মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া দখলকৃত পশ্চিমতীর থেকে জেরুজালেমে প্রবেশের ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইসরায়েলি সেনারা হাজারো ফিলিস্তিনিকে সামরিক চেকপয়েন্ট অতিক্রম করে আল-আকসায় যেতে বাধা দেয়। বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় ঘোষণা করে, কেবল ৫৫ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ, ৫০ বছরের বেশি বয়সি নারী এবং ১২ বছরের কম বয়সি শিশুদের মসজিদে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে। পাশাপাশি মুসল্লিদের আগে থেকে নিরাপত্তা অনুমোদন নিতে হবে এবং নির্দিষ্ট চেকপয়েন্টে কঠোর তল্লাশির সম্মুখীন হতে হবে। এসব বিধিনিষেধের পরও জেরুজালেমের স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা ও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে বসবাসকারী আরব শহরগুলোর বাসিন্দারা মসজিদুল আকসায় উপস্থিত হন। নামাজ শেষে মুসল্লিরা গাজা ও পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের জন্য গায়েবানা জানাজা আদায় করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত