ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মেডিয়েশনে ৩.৫ মিলিয়ন ডলার পেল বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন

মেডিয়েশনে ৩.৫ মিলিয়ন ডলার পেল বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন

বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৩ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। ইতালির সিসিলির জেলা বন্দরে এম.টি বাংলার অগ্রগতি ট্যাংকারের ক্ষতির কারণে এই অর্থের দাবিতে মেডিয়েশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘এটি কেবল আর্থিক অর্জন নয়, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অঙ্গনে বাংলাদেশের সক্ষমতার দৃষ্টান্ত।’ গতকাল তিনি বলেন, ‘এই সফলতা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জাহাজ পরিচালনা ও বাণিজ্য আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ এই সাফল্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ আন্তর্জাতিক মেরিটাইম ও বাণিজ্যিক মহলেও প্রশংসিত হয়েছে। তথ্যমতে, ২০১৯ সালের মে মাসে বিএসসির বহরে যুক্ত হয় আধুনিক কেমিকেল ও প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার এম.টি বাংলার অগ্রগতি। ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল জাহাজটি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চার্টারে নিযুক্ত হয়। সেপ্টেম্বর ২০২২-এ ইন্দোনেশিয়ার তিনটি বন্দর থেকে ভেজিটেবল অয়েল পরিবহন শেষে ইতালির সিসিলির জেলা বন্দরে পৌঁছালে পাঁচটি কার্গো ট্যাংকের অভ্যন্তরীণ কোটিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ভবিষ্যতে জাহাজ পরিচালনায় ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারত। বিষয়টি প্রটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি ক্লাব ও ইনস্যুরারদের অবগত করানো হয়। বিভিন্ন পরীক্ষায় কার্গো ট্যাংকের ক্ষতির জন্য কোনো পক্ষকে এককভাবে দায়ী করার প্রমাণ না পাওয়ায় আইনি পদক্ষেপের বদলে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি বা মেডিয়েশন প্রক্রিয়া গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএসসি নিয়োগকৃত ইংরেজ মেরিটাইম আইনজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের সম্মতিক্রমে লন্ডনে অনুষ্ঠিত একদিনব্যাপী মেডিয়েশন সভায় অংশ নেয় বিএসসির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। ইংল্যান্ডের প্রখ্যাত আইনজ্ঞ স্টিফেন মিলস মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিলেন। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা কঠোর আলোচনার শেষে বিএসসি ৩ দশকিম ৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ আদায় করতে সক্ষম হয়। বিএসসির আইনজ্ঞ বলেন, ‘এই মেডিয়েশন ছিল বাণিজ্যিক ও আর্থিক দিক থেকে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।’ সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে এই ধরনের পেশাদার ও কৌশলী সমস্যা সমাধানের দৃষ্টান্ত বিরল। আইনি ঝুঁকি এড়ানো এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধ সমাধানের সক্ষমতা দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনুকরণীয় রোডম্যাপ হতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত