সুনামগঞ্জে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবাগ্রহীতাদের নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উদ্যোগে এক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে এই গণশুনানির আয়োজন করা হয়।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আখতার হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ, দুদকের সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রাফি নাজমুস সাদাত এবং জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মহিবুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজ আহ্সান ফরিদ বলেন, ‘দুর্নীতি হলো শোষণের হাতিয়ার, যার শিকার সাধারণ মানুষ। এখন আর দুর্নীতি শুধু জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ কিংবা সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই এটি সাধারণ মানুষের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২৪ সালে এসে আমরা বুঝতে পেরেছি, দুর্নীতি দেশকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সবকিছু নিঃশেষ করে দিয়েছে, শোষণ করে নিয়ে গেছে।’ তিনি ঘুষ না দিতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘যারা ঘুষ খায়, তারা অমানুষ। তারা নিজের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে অসম্মান করে। ঘুষ দেবেন না, চিৎকার করুন, প্রতিবাদ করুন। সবাই একসঙ্গে প্রতিবাদ করলে পরিবর্তন অবশ্যই আসবে। তখন হয়তো দুদকের প্রয়োজনই থাকবে না।’
পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সঞ্চালনায় গণশুনানিতে সেবাগ্রহীতারা বিভিন্ন দপ্তর, জেলা, সদর, হাসপাতাল, পৌরসভা, বিদ্যুৎ বিভাগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়, পুলিশ বিভাগ, নির্বাচন কার্যালয়, বিআরটিএ, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাসপোর্ট অফিস, জেলা কারাগার, এলজিইডি, ভূমি অফিস, প্রাণিসম্পদ দপ্তর, বিটিসিএল এবং সেটেলমেন্ট কার্যালয়সহ বিভিন্ন বিভাগে অনিয়ম, দুর্নীতি, হয়রানি ও ভোগান্তির অভিযোগ তুলে ধরেন। শুনানিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরেরর কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে এসব অভিযোগের জবাব দেন এবং করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। অভিযোগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠে আসে ভূমি-সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর।