পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শিল্প কারখানায় ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও জলাধার ও নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং শিল্প কারখানার ব্যবহৃত পানি রিইউজ করতে বাধ্য করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগরীর পিটিআই অডিটোরিয়ামে নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়ামণ্ড২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব বলেন তিনি। উপদেষ্টা রেজওয়ানা আরও বলেন, আমরা ঢাকার ৪টি নদী দখল-দূষণমুক্ত করার চুক্তি করে কর্মপরিকল্পনা দিয়ে যাব। কারণ এগুলো আমাদের সময় করতে পারবো না। তবে, আমাদের সময়ের মধ্যেই তুরাগ নদীর পুনরুদ্ধার শুরু হবে। গাছা খাল, লবনদহ, পুকুর উদ্ধার ও ৮ আগস্টের পর দখল হওয়া ও ঝামেলা কম এমন দখল হওয়া বনভূমি উদ্ধার। এই কয়েকটি কাজ আমরা আগে শেষ করবো। বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল ও নদীপক্ষের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান, গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক, বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানীকারক সমিতিরি সভাপতি মো. রাশেদুল করিম মুন্না প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই নদী নিয়ে তথ্যবহুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বক্তারা পরিবেশ দূষণ রোধ ও অবৈধ দখল উচ্ছেদে ১৬ টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
এসবের মধ্যে রয়েছে, গাজীপুরের ওপর দিয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, বানার, চিলাই, লবণদহ, শালদহ, গোয়ালী, তুরাগ, বংশী, বালু, গোয়াল্লার, পারুলীসহ আরো কয়েকটি ছোট নদ-নদী। রয়েছে অনিন্দ সুন্দর বোলাই, মকশ বিলসহ কয়েকটি স্বাদু পানির জলাধার। দখলে দূষণে বিপর্যস্থ থাকা সত্ত্বেও এখনও এসব নদী-নদী ও জলাধার নিজ জেলাতো বটেই আশাপাশের অঞ্চলগুলোর সমাজ সংস্কৃতিতে প্রভাব রেখে চলেছে। সমৃদ্ধ করছে ভূগর্ভস্থ পানিকেও। সব ধরনের প্যারামিটারে গ্রহণযোগ্য মাত্রা এবং স্বাদের আলাদা ধরনই ছিল এ অঞ্চলের পানির অনন্য বৈশিষ্ট। এছাড়া এসব নদী ছিল মৎস সম্পদের এক বিশাল ভান্ডার। গবেষণায় দেখা গেছে, এই জেলার পানির গুনগত মান কমছে। কোথাও কোথাও পানিতে দ্রবণীয় অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্যের ঘরেও চলে যাচ্ছে। এজন্য নদী দূষণ সর্বাংশে দায়ী। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নদী ও জলাভূমিকে রক্ষা করার পথ খুঁজতে আজকের এই আয়োজনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।