পেশাদার সাংবাদিকদের বৃহৎ সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত। গতকাল সোমবার ডিআরইউ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। ডিআরইউয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের ঐক্য হবে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। যার মধ্যে মিডিয়ার স্বাধীনতা অন্তর্নিহিত আছে। গণতান্ত্রিক সরকার যে রিফর্ম করতে পারবে তা এই সরকার পারবে না। আগামী দিনে ঐক্য থাকবে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে চাই। এটা যত বিঘ্নিত হবে তত বেশি সংকট বাড়বে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, আমরা নির্বাচন চাই একই সঙ্গে সংস্কারও জরুরি। রাষ্ট্রীয় সরকারের সংস্কার সঠিকভাবে না হওয়ার কারণে ফ্যাসিবাদের জন্ম নিয়েছে। সুতরাং ফ্যাসিবাদ যাতে করে আর কখনও ফিরে না আসতে পারে সেজন্য সংস্কার সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এতে মিডিয়াসহ সব সেক্টরে স্বাধীনতা বজায় থাকবে।
ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘ত্রিশ বছরের পথচলায় ডিআরইউ শুধু একটি সংগঠন নয়, এটি এখন দেশের সাংবাদিক সমাজের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর।’
তিনি বলেন, ডিআরইউ সব সময়ই সাংবাদিকদের অধিকার, নিরাপত্তা এবং পেশাগত উৎকর্ষতা অর্জনে কাজ করে এসেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সাংবাদিকরা নির্ভয়ে এবং দায়িত্বশীলভাবে তাদের পেশাগত কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য ডিআরইউ সবসময় পাশে থাকবে।’
সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল তার বক্তব্যে বলেন, ‘ডিআরইউ শুধু সংবাদকর্মীদের সংগঠন নয়, এটি একটি আন্দোলনের নাম, একটি চেতনার নাম।’ তিনি ডিআরইউ’র অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়ন ও সুরক্ষায় কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
অনুষ্ঠানে ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, ডিআরইউ সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলামসহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. বোরহান উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদুল হক খান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ) ও কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আকতারুজ্জামান, আমিনুল হক ভূঁইয়া, মো. ফারুক আলম, সুমন চৌধুরী ও মো. সলিম উল্ল্যা (এসইউ সেলিম) উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে কেক কাটা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাল্টিমোড গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল মিন্টু। নাসরিন ফাতেমা আউয়াল মিন্টু বলেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন। প্রতিষ্ঠাবার্ষীকিতে এই সংগঠনের সাফল্য কামনা করি। দেশের গণতন্ত্রের উত্তরণে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। আশা করি সাংবাদিকরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ডিআরইউ চত্বর বেলুন দিয়ে সাজানো এবং আলোকসজ্জা করা হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের সৌজন্যে দিনব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।