বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের আসল চিত্র সামনে আসছে। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ বিবরণী থেকে এ তথ্য উঠে এসেছে। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি ও নিয়মনীতি কঠোরভাবে প্রয়োগের ফলে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র একে একে সামনে আসছে। এতদিন যেসব ঋণ পরিশোধ না করেও কাগজে-কলমে ‘নিয়মিত’ বা ‘ভালো’ হিসেবে দেখানো হতো, এখন সেগুলো রূপ নিচ্ছে মন্দ ঋণে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা সুবিধা নিয়ে বিতরণ করা বিতর্কিত ঋণগুলো এখন দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। বাড়ছে মন্দ ঋণের পাল্লা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নামে–বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, নিয়মনীতি স?ঠিক পরিপালনের কারণে এখন তা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। ফলে খেলাপি ঋণ এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের মার্চ প্রান্তিকে শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪০ কোটি টাকা।