জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী মো. হৃদয়ের (২১) লাশের সন্ধানে প্রায় এক বছর পর অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর নগরের কড্ডা এলাকায় তুরাগ নদে এ অভিযান চালানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে অংশ নিয়েছে গাজীপুর, টঙ্গী ও ঢাকার ডুবুরি দল। অভিযানে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গ্রেপ্তারকৃত এক আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হৃদয়ের লাশ উদ্ধারে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নিহত হৃদয় টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার আলম নগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি কোনাবাড়ীতে অটোরিকশা চালাতেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। এখন পর্যন্ত তাঁর লাশ খুঁজে পায়নি পরিবার। হৃদয়ের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম গত বছরের ২৬ আগস্ট কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যসহ অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ জাস্টিস প্রজেক্ট’ ও ‘টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট’ হৃদয়ের ঘটনাটি নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করে। সেখানে হৃদয়কে গুলি করার দৃশ্যও উঠে আসে। এর পর থেকেই বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ সদস্য আকরাম হোসেনসহ আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল বেলা ১১টার দিকে তুরাগ নদে ডুবুরি দল লাশের সন্ধানে নামে। বেলা ১টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় ওই অভিযান চলছিল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এস এম তাসমিরুল ইসলাম, গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, ডুবুরি দল তুরাগ নদে হৃদয়ের লাশের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে। হৃদয়ের পরিবার জানায়, ঘটনার দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর পুলিশ তার দেহ টেনে পাশের গলির দিকে নিয়ে যায়। সেই ভিডিও ফুটেজও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।