ভোলার বোরহানউদ্দিনে আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো, বেগুন, শসা ও মরিচ চাষ করে সাফল্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছেন কৃষকরা। নতুন এ প্রযুক্তির মাধ্যমে সবজির উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। ফলে কৃষকদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাঁসি, জীবনে এসেছে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এবার ব্যাপকভাবে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তাদের মতে এ পদ্ধতিতে কৃষি জমিতে পচনশিল উপকরণে তৈরি প্লাস্টিকের আবরণ ব্যবহার করা হয়, যা মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে, আগাছার বিস্তার রোধ করে এবং রোগবালাই প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ফলে উৎপাদনশীলতা বাড়ছে, সবজির গুণগত মানও থাকছে চমৎকার। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের এই উদ্যোগ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে এবং তারা এখন নতুন সম্ভাবনার দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়ে।
কৃষক শেখ ফরিদ বলেন, গত বছর প্রচলিত পদ্ধতিতে চাষ করেছিলাম, কিন্তু ফলন আশানুরূপ হয়নি। এবার মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারে টমেটো করেছি, ফলন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বাজারেও ভালো দাম পাচ্ছি। এতে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটছে।
কৃষক মো. মনির হোসেন বলেন, আগে আগাছা পরিষ্কারের জন্য বাড়তি খরচ হতো, এখন সেটা লাগে না। পাশাপাশি ফসলের বৃদ্ধ খুব ভালো হয়েছে, দেখতে মন ভরে যায়। এবার আমার মরিচ ভালো হয়েছে।
মালচিং পদ্ধতির সফলতা দেখে অনেক কৃষক আগ্রহী হচ্ছেন এবং আগামী মৌসূমে আরও বেশি জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষের পরিকল্পনা করছেন। মালচিং পদ্ধতির এই অভূতপূর্ব সফলতা কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনের নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। সরকারি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেলে কৃষক এ পদ্ধতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবেন, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং টেকসই কৃষির ভিত্তি গড়ে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. শামিম আহমেদ বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে। মালচিং পদ্ধতি কৃষকদের জন্য বেশ লাভজনক এবং এটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষকদের মধ্যে এই পদ্ধতি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।