জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, এমপি নির্বাচিত হলে হারামের কোনো টাকা পেটে যাবে না। বিগত সময়েও আমি কোনো হারামের টাকা খাইনি। আমার সম্পদ নেই, তবু আল্লাহ আমাকে ভালো রেখেছেন। বিগত দিনের মতো ভবিষ্যতেও আমি জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা সদরে তারাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শোকরানা সমাবেশ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছি। আপনারা চাননি বলে আমি এমপি হতে পারি নাই। জামায়াতে ইসলামী জোর করে ভোট সেন্টার দখল, ভোটারদের টেনে নিয়ে গিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করতে চায় না। আগামী নির্বাচনে আমি বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। আমি কথা দিচ্ছি, যদি আমি এমপি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে হারামের কোনো টাকা আমার পেটে যাবে না।’ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে সদ্য খালাসপ্রাপ্ত এ জামায়াত নেতা বলেন, শকুনেরা এখনও হাত পেতে আছে দেশ দখলের জন্য। তারা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে বিচারের নামে যাদের ফাঁসি হয়েছে, তাদের পূর্ণাঙ্গ রায় বের হলে দেখতে পাবো তাদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিচারের নামে এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। না হলে দেশে আইনের শাসন থাকবে না। আগে আদালত চলতো দলীয় রাজনীতির মাধ্যমে, এখন আদালত মুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে আজহারুল বলেন, আমি আমার পক্ষে রায় পাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার তো রায় হয়ে গিয়েছিল, ফাঁসি কার্যকর হবে। আল্লাহর রহমতে আজ আমি মুক্ত, যেই বিচারকরা আমাকে সাজা দিয়েছেন তারা আজ কোথায়?
তিনি আরও বলেন, যে অপরাধে আমাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছিল, আল্লাহর কসম আমি সেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমি আফসোস করি, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ গঠন করে সাক্ষী দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিচারপতিদের তো বিবেক থাকা দরকার। তারা বিবেক বিক্রি করেছিল আরেক জায়গায়। এই বিবেকহীন বিচারপতিরা যতদিন দেশে থাকবে, ততদিন দেশের মানুষ ন্যায় বিচার পাবে না। তিনি আরও বলেন, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আমাদের নেতা মীর কাশেম দেশের বাইরে ছিলেন। অনেকে তাকে দেশে ফিরতে নিষেধ করেছিলেন।
তিনি মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে দেশে ফিরেছিলেন। তাকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। অথচ অমুকের বেটি দেশ ছেড়ে পালায় না বলেছিল। তার কর্তৃত্ব আজ চুরমার করে দিয়েছেন আল্লাহ। যারা দেশ ছেড়ে পালায় তাদের হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকার বলেছে, এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচন দিক। মানুষ ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি। এজন্য অনেকের মাঝে ভোটের প্রতি বিতৃষ্ণা আছে। আমি অনুরোধ করব, এবার ভোট বিপ্লব ঘটাতে হবে। আমরা যদি যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে ভুল করি তাহলে বিপদে পড়তে হবে। সমাবেশে তারাগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির এসএম আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাহবুব হোসেন বেলাল, রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান, মিঠাপুকুর জামায়াতের আমির গোলাম রব্বানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পরে বিকেলে এ টি এম আজহারুল ইসলাম বদরগঞ্জের শাহাপুর মাঠে শোকরানা সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।