ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিধিমালা বা নীতিমালা প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছেন সুপ্রিমকোর্টের তিন আইনজীবী। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন ও সংশ্লিষ্ট আইন অনুসারে ওই প্রক্রিয়া শুরু করতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আজ রোববার রিট করা হয়। রিটে ঢাকা শহরে কতগুলো ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে, বিদ্যমান নিরাপত্তাব্যবস্থা; এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা আছে কি না এবং নীতিমালার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, এসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। গত ২৩ এপ্রিল প্রথম আলোর ছাপা পত্রিকায় ‘ব্যাটারিচালিত রিকশার নৈরাজ্য: নিরাপত্তা-শৃঙ্খলার প্রশ্নে আপস নয়’ শীর্ষক সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। একই দিন প্রথম আলো অনলাইনের ইংরেজি সংস্করণে তা প্রকাশিত হয়। সেটি যুক্ত করে তিন আইনজীবী ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে প্রয়োজনীয় বিধিমালা বা নীতিমালা প্রণয়নের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করেন। তিন আইনজীবী হলেন মো. জাকারিয়া হাবিব, বিবেক চন্দ্র ও মো. সাদ্দাম হোসেন।
বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী বিবেক চন্দ্র। তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে। দুর্বল গতি নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা এবং অতিরিক্ত গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায়ই এসব দুর্ঘটনা ঘটে। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সনদও নেই। বিবেক চন্দ্র আরও বলেন, ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ১২৪ ধারা অনুসারে জনস্বার্থে নিরাপদ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকার যে কোনো আদেশ বা নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারে। অটোরিকশার কারণে সড়কে যেসব দুর্ঘটনা ঘটছে, দৃশ্যত তা রোধে কোনো বিধিমালা বা নীতিমালা নেই। যে কারণে রিটটি করা হয়। রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, জননিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা বা বিধিমালা প্রণয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। নীতিমালা বা বিধিমালা প্রণয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় ঢাকা শহরে কতগুলো ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে এবং বিদ্যমান নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ বিস্তারিত তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুসচিব, আইনসচিব, বিআরটিএর চেয়ারম্যান, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকসহ আটজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।