কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু মোটাতাজাকরণ ও লালন-পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফেনীর খামারিরা। গোখাদ্যের বাড়তি দাম, পশুর ওষুধসহ বিদ্যুতের খরচ খামারিদের সামাল দিতে কষ্ট হলেও ভালো দাম পাওয়ার আশায় দিনরাত পশুর পরিচর্যা করে যাচ্ছেন তারা। তবে বাজারে আমদানি অথবা সীমান্তের চোরাইপথে গরু না ঢুকলে বড়ধরনের লোকসান থেকে রক্ষা পাবেন খামারিরা। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দাবি, পশু খাদ্যের দামের প্রভাব পড়বে কোরবানির বাজারে।
জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে ফেনীতে। এবার জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮২ হাজার ৩৩৬টি। তারমধ্যে বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা হচ্ছে ৮৭ হাজার ২২৭টি গবাদি পশু। এরমধ্যে ৬৯ হাজার ৩৬০টি গরু, ১ হাজার ৬৬৭টি মহিষ এবং ১৩ হাজার ২৪৩টি ছাগল ও ৩ হাজার ১৪৭টি ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে। গত বছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ৮৭ হাজার ২০০টি। তারমধ্যে বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা হয় ৯০ হাজার ২৫০টি গবাদি পশু।
দেবীপুরের খামারি আকবর হোসেন বন্যার ধকল কাটিয়ে চলতি বছর খামারে প্রায় দুই শতাধিক গরু রয়েছে। সময়ের সঙ্গে গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। সেই অনুযায়ী দামও কিছুটা বেশি হবে স্বাভাবিক। সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ না করলে লাভবান হওয়া যাবে।
ফেনী সদরের সোহান এগ্রোর স্বত্বাধিকারী হাসান মাহমুদ সবুজ বলেন, গত বছর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার সবকিছু অনুকূলে থাকলে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারব। কিন্তু প্রায় সময় কোরবানির শেষসময়ে বাইরে থেকে গরু আসার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। বাজারদর অনুকূলে থাকলে আশা করি হাটে ভালো দাম পাব।
আবদুল ওহাব রিয়াদ ভূঞা নামে এক খামারি বলেন, জেলার সীমান্ত পরশুরামের, ফুলগাজীর ও ছাগলনাইয়া উপজেলার কিছু এলাকা দিয়ে বছরজুড়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ করে। এমনটি অব্যাহত থাকলে কোরবানির বাজারে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন। বিজিবি সূত্র জানায়, ফেনীর বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে অবৈধপথে ভারত থেকে আসা ১২৩টি গরু আটক করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৬৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ পশু রয়েছে। অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে যেন কোনো গরু না আসে সেজন্য সীমান্তে বিজিবি সচেষ্ট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধভাবে ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মোহাম্মদ আরাফাত নামে এক খামারি বলেন, যানজট ও জামেলামুক্ত ভাবে এরইমধ্যে খামারে এসে ক্রেতারা গরু কেনা শুরু করেছে।