মুরগি পালন করে ঈশ্বরদীতে অনেকেই সফলতা অর্জন করেছেন। সঠিক পরিকল্পনা, রোগ ব্যবস্থাপনা এবং বাজারজাতকরণের মাধ্যমে তারা সফলতা অর্জন করে লাভবান হচ্ছেন। পৌর এলাকার বাইরে ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী সরদারপাড়া গ্রামের মৃত হাজী নকিম উদ্দিন সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম পোল্ট্রি খামার করে সফলতা অর্জন করেছেন। ২০০৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস করার পরে অর্থনৈতিক উন্নতি এবং সফলতা হয়, এমন পেশা নিয়ে ভাবতে থাকেন রবিউল। রবিউল জানান, টিভি চ্যানেলে এবং খবরের কাগজে পোল্ট্রি খামার করে অনেকের সফলতা অর্জনের খবর পড়ে রবিউল সিদ্ধান্ত নেন মুরগির খামার করবেন। প্রথমে ১ হাজার মুরগির বাচ্চা দিয়ে পোল্ট্রি খামার শুরু করেন।
২০ বছর নিরলস পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে তিনি আজ একজন সফল পোল্ট্রি খামারি। এরইমধ্যে তিনি জাতীয় পদকে ভূষিত হয়েছেন। পোল্ট্রি খামারের পাশাপাশি, মাছ চাষ, ধান চাষ ও সবজি উৎপাদনের খামারও তিনি গড়ে তুলেছেন। খামার পরিচালনার শুরুর পর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি, এখন শুধুই এগিয়ে চলেছেন সামনের দিকে। রবিউল আরও জানান, খামার শুরুর প্রথমদিকে মুরগি পালন করে তিনি গোটা বছরের পারিবারের ডিমের ও মুরগির চাহিদা মিটানোর পর ডিম ও মুরগি বিক্রি করে বাড়তি কিছু আয় করতে থাকেন। বাড়তি আয়ের অর্থে খামারকে প্রসারিত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে তার খামারে ১০ হাজার মুরগি রয়েছে। এরমধ্যে ৭ হাজার মুরগি ডিম দেয়, বাকিগুলো ছোট বাচ্চা। বর্তমানে প্রতিদিন ৬ হাজার ৮০০ ডিম বিক্রি করে থাকেন।
রবিউল জানান, পোল্ট্রি ও সবজি খামারে এখন ১৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। এরমধ্যেই চারজন নারী ও দুইজন প্রতিবন্ধী শ্রমিকও রয়েছে। হাজী নকিম উদ্দিন পোল্ট্রি খামারের স্বত্বাধিকারী আলহাজ রবিউল ইসলাম আরও বলেন, মুরগির বিষ্ঠা দিয়ে পরিবেশবান্ধব একটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তিনি তৈরি করেছেন। এই প্লান্ট থেকে পরিবারের রান্নার পাশাপাশি আরো বেশ কয়েকটি বাড়িতে বায়োগ্যাস সাপ্লাই দিয়েছেন। রবিউল দেশের অবহেলিত যুব সমাজকে এগিয়ে নিতে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, গবাদিপশু পালন, নকশী কাঁথা, হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ সেন্টার গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি শিক্ষিত বেকার যুবকদের পোল্ট্রি খামার করার জন্য আহ্বান জানান। ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন বলেন, রবিউল পোল্ট্রি খামার করে আজ সফল ও মডেল খামারি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। রবিউল পোল্ট্রি খামার করে কিছুটা হলেও দেশের মুরগি ও ডিমের চাহিদা পূরণ করছেন। সেই সঙ্গে দেশের মানুষের পুষ্টির জোগানও দিচ্ছেন রবিউলের পোল্ট্রি খামারটি।