তাড়াইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে এ বছর ৮১৯ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ৭০৪ হেক্টর জমিতে। দেশি ১০০ হেক্টর, তোষা ৫০ হেক্টর, কেনাফ ৩৫০ হেক্টর ও মেস্তা ২০৪ হেক্টর জমিতে। এবার পানির সংকট থাকার কারণে পাটের সোনালি রং খুব কম লক্ষ্য করা গেছে। উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের বেলংকা গ্রামের কৃষক আবদুল গণি (৬৪) জানান, গত বছর পাটের দাম কিছুটা ভালো ছিল। সেই আশায় এ বছরও সাত কাটা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। তবে এ বছর বৃষ্টি কম হয়েছে। বৃষ্টি বেশি হলে গাছ মোটাতাজা হতো, এতে আঁশও বেশি পাওয়া যেত, কৃষকরা দামও ভালো পেতেন।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর পাটের দাম তুলনামূলক কম, আমি আগের বছরের চেয়ে এ বছর প্রায় তিন কাঠা বেশি জমিতে পাট চাষাবাদ করেছি। হালচাষ, সার-বীজ, সেচণ্ডনিড়ানি, পাট কাটা, ধোয়া শুকানোয় অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে পাটকাঠি বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেব। তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান, আলতু মিয়া, রমজান আলী বলেন, পাটকাঠি আমাদের এলাকায় পাটখড়ি নামে পরিচিত। আবার কোথাও পাটকাঠি নামও শোনা যায়। আগে সস্তা জ্বালানির বাইরে পাটখড়ির তেমন ব্যবহার ছিল না। বাজারে পাটখড়ির চাহিদা বাড়ায় আঁশের পাশাপাশি কাঠির দামও ভালো পাওয়া যায়।
তারা আরও বলেন, পাট চাষ করে এই বছর আমাদের খরচ উঠছে না। পানি কম থাকায় পাট জাগ দিতে হয়েছে পুকুরে। সরেজমিন জানা যায়, কৃষকরা জমির পাট থেকে যে পাটখড়ি পেয়েছে তা ভালোভাবে শুকিয়ে পরিষ্কার করে বিক্রি করতে পারলে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে তাদের। গ্রামের মানুষ রান্নার কাজে ও ঘর দেওয়ার কাজে ব্যবহারের জন্য পাটকাঠি কিনে থাকে। পাশাপাশি প্রতি আঁটি পাটখড়ি ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকরা পাটের কম দাম পেলেও পাটখড়ি বিক্রি করে বাড়তি অর্থ ঘরে তুলতে পারছেন।
তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বিকাশ রায় বলেন, শস্যভাণ্ডার খ্যাত তাড়াইল উপজেলায় এ বছর বৃষ্টির অভাবে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তিনি আরও বলেন, পাটকাঠি রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যে কারণে কৃষকরা পাটখড়ি বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।