
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে হাড়কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। যথেষ্ট ভারি কাপড় ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া কঠিন। ঘরের ভেতরেও বেশ ঠাণ্ডা। প্রচণ্ড এ শীতে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে বেড়েছে শীতের পোশাক বিক্রি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- নিউমার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূরজাহান প্লাজা, গ্লোব সুপার মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, হকার্স মাকের্ট ও বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেটে ছিল ক্রেতাদের ভিড়। এসব মার্কেটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দর কষাকষি যেমন হচ্ছে, বিক্রিও হচ্ছে অনেক।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মার্কেট, শপিংমল ও ফুটপাত সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাহারি রং ও ডিজাইনের শীতের পোশাক টাঙিয়ে রাখা হয়েছে প্রায় প্রতিটি দোকানে।
এছাড়াও থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সাইজ ও মানের জ্যাকেট, সোয়েটার, ব্লেজার, হুডি, সুইফ শার্ট, মেগি হাতা জ্যাকেট, মোটা কাপড়ের টি-শার্ট, মাফলার, কানটুপিসহ হরেক রকমের শীতবস্ত্র। নিউমার্কেটে শীতের পোশাক বিক্রি করেন মো. আশরাফুল ইসলাম। তিনি বাসসকে বলেন, হঠাৎ করে শীত বেড়ে গেছে। তাই গত কয়েক দিন ধরে শীতের পোশাক বিক্রি অনেক বেড়েছে। কয়েকদিন আগে যে পরিমাণ বিক্রি হতো, এখন তা দ্বিগুণ হচ্ছে। নূরজাহান মার্কেটে ছেলে-মেয়েদের জন্য শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা ডলি চন্দ্র দাস। তিনি বাসসকে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সবারই আগেরবারের শীতের কাপড় ছিল। সেটাই পরতে শুরু করেছি। আমার মেয়ের বয়স সাত বছর ও ছেলের দুই বছর। তারা জেদ ধরেছে শীতের নতুন পোশাকের জন্য। তাই বের হয়েছি ওদের পছন্দের জ্যাকেট কিনতে। এছাড়াও শীত জেঁকে বসায় রাজধানীর নিউমার্কেট, ফার্মগেট, গুলিস্তান বঙ্গমাকের্ট, মৌচাক ও মিরপুর এলাকার ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেশ ভিড় দেখা যাচ্ছে। বিক্রিও বেড়েছে যথেষ্ট। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করছেন এসব দোকানে। দাম নাগালে থাকায় সন্তুষ্ট ক্রেতারাও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখর এসব এলাকা। কিছু দোকানে কাপড়ের দাম টাঙিয়ে দেওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে দর কষাকষির ঝামেলা নেই। তাই খুব সহজে প্রত্যেকে নিজের পছন্দমতো কাপড় কিনতে পারছেন। মার্কেটের চেয়ে কম দামে শীতের পোশাক কিনতে পারায় খুশি লোকজন। অধিকাংশ দোকানের সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। তবে বিদেশি পুরোনো শীতবস্ত্রের দোকানে ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসব দোকানে হুডি, সোয়েটার, টাইটস, জ্যাকেট, বাচ্চাদের কানটুপি, মেয়েদের কার্ডিগান, মাফলার, মোজা, ট্রাউজার, ফুলহাতা গেঞ্জি, চাদর, শিশুদের জন্য জাম্পার ও কাপড়ের জুতা কিনতে দেখা যায় ক্রেতাদের। ফুটপাতের দোকানগুলোতে মানভেদে বড়দের শীতবস্ত্রের দাম ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত এবং শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের শীতবস্ত্র মিলছে ২০০-৫০০ টাকার মধ্যে।
মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের কাছে এসব দোকানই এখন প্রধান ভরসা। অনেকেই পরিবারের সদস্যদের জন্য একসঙ্গে একাধিক পোশাক কিনছেন। মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাপড়ের মান অনুযায়ী ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে। তবে ২৫০-৭০০ টাকা দামের শীতবস্ত্রের চাহিদা বেশি দেখা গেছে। ফুটপাথের হকাররা জানান, হঠাৎ করে বেশি শীত অনুভূত হওয়ায় গরম কাপড়ের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে।