ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

টেকসই বিদ্যুৎ খাতের জন্য বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ

টেকসই বিদ্যুৎ খাতের জন্য বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ

২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৩০ শতাংশে উন্নীত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গতকাল রোববার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ ‘এনডিসি ৩.০: ভবিষ্যৎ টার্গেট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই তথ্য জানানো হয়। সেশনটি পরিচালনা করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত দেশের সর্বাধিক কার্বন নিঃসরণকারী খাত।

জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, বাংলাদেশকে আরও উচ্চাভিলাষী কার্বন নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২৫ সালের জন্য এনডিসি ৩.০ খসড়া প্রণয়ন করছে। এরইমধ্যে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যা ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তবে এই লক্ষ্য অর্জনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে টেকসই বিদ্যুৎ খাত গড়ে তুলতে আগামী দুই দশকে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৬ হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজন ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩৫ সালে ১২ হাজার ৮৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে লাগবে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৪১ সালে ১১ হাজার ১২৪ মেগাওয়াট উৎপাদনে প্রয়োজন হবে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সর্বমোট ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৩০টি বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

আলোচনা সভায় দুটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। সিপিডির গবেষণা সহকারী মেহেদী হাসান শামীন উপস্থাপন করেন ‘এনডিসি ২.০ বাস্তবায়নের অগ্রগতি’ বিষয়ক গবেষণা।

অপর গবেষণা উপস্থাপন করেন হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি, যেখানে ২০৪০ সালের মধ্যে জলবায়ু লক্ষ্য পূরণে উপযুক্ত জ্বালানি মিশ্রণ ও প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণায় উঠে আসে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে না পারলে জলবায়ু অভিযোজন ও নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে যাবে। সিপিডির গবেষণা বলছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে দেশের বিদ্যুৎ খাত আরও বেশি কার্বন নির্ভর হয়ে পড়বে, যা আন্তর্জাতিক জলবায়ু প্রতিশ্রুতি অর্জনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

ফলে নবায়নযোগ্য খাতে আন্তর্জাতিক তহবিল, দেশীয় বিনিয়োগ এবং কার্যকর নীতির সমন্বয় ছাড়া জলবায়ু লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। সংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ সাফিউল্লাহ এবং একই মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ উইং-এর অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম রেজওয়ান খান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. এম আসাদুজ্জামান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত