সবকিছু ঠিকঠাক চললে হয়তো তৃতীয় ম্যাচটাও জিতে পাকিস্তানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার প্রতিশোধ নিতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরে সুবিধা করে উঠতে পারেনি টাইগাররা। শুরুতেই ম্লান হয়ে গেল তাদের স্বপ্ন। তবে টানা ৬ সিরিজ হারের পর দেশে ও দেশের বাইরে মিলিয়ে দুই সিরিজ জয়। অধিনায়ক লিটন দাসের নেতৃত্বে জয়ের বৃত্তে ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর এবার ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জয়।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি জিতলেও শেষ ম্যাচে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। একাদশে ৫ পরিবর্তন এনে এদিন নামে বাংলাদেশ। স্কোয়াডের সবাইকে সুযোগ দিয়ে যেন টাইগার ম্যানেজমেন্ট দেখতে চেয়েছে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। তবে মিরপুরের উইকেটে ১৭৯ রান তাড়া করা উচিত ছিল বলে মনে করেন লিটন। যদিও প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে উইকেট বেশ মন্থরই ছিল। ‘এটা খুবই ভালো উইকেট ছিল। যে দুটি ম্যাচ আমরা আগে খেলেছি, সেগুলোর চেয়ে অনেক ভালো উইকেট ছিল। ব্যাটিং বান্ধব উইকেট ছিল। আমরা বোলিং ইনিংসে অনেক ভালো বোলিং করেছি। অধিনায়ক হিসেবে আমি মনে করি, ১৮০ রান তাড়া করা উচিত ছিল আমাদের। পাওয়ার প্লেতেই আমরা ম্যাচটা অনেকটা হেরে গেছি। ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আজকে হিসেবি ব্যাটিং করতে পারিনি আমরা।’
উইকেট নিয়ে সমালোচনা হলেও লিটন করছেন প্রশংসা, ‘এই সিরিজ সব মিলিয়ে খারাপ যায়নি। যে উইকেট আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে, তা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে নিজের খেলা। আমরা চেষ্টা করেছি সেরা ক্রিকেট খেলার। আমার মনে হয়, আমরা ভালোই দুটি ম্যাচ খেলেছি। আজকের ম্যাচ ছাড়া। আজকে ব্যাটিং আমরা ভালো করিনি। গোটা সিরিজে সবমিলিয়ে বোলিং ভালো করেছি।’ টানা সিরিজের পর এবার বাংলাদেশের লম্বা বিরতি। ভারত না আসায় সামনে এখন শুধু এশিয়া কাপ। এ সময়ে লিটনরা নিজেদের ফিটনেসকে ঠিকঠাক করতে চান। ‘এমনিতে সফল হলেও কিছু কিছু জায়গা তো থাকবেই উন্নতির জন্য। দল হিসেবে আমরাও জানি আমাদের কোথায় ঘাটতি আছে। আমাদের এই সিরিজের পর কোনো খেলা নেই (অনেক দিন), আমাদের একটা বিরতি আছে। টানা ৪০ দিন ধরে টানা খেলছি আমরা। কিছুদিন বিরতির পর আবার আমরা ফিটনেসের ওপর মনোযোগ দেব এবং যে সুযোগ আমাদের সামনে আসবে, যদি আমরা ক্যাম্প করি বা কোনো সিরিজ যদি হয়, ওটাকে আমরা আবার ম্যাচে রূপান্তর করার চেষ্টা করব’-আরও যোগ করেন লিটন। সামনের লম্বা সময়ের জন্য এই দলকে সেটই বলা যায়। তবে লিটন বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সতীর্থদের দিয়েছেন বার্তা। ‘মোস্তাফিজ ছাড়া আমরা সবাই জানি মোস্তাফিজ ডেথ বোলিংয়ে কতটা বিধ্বংসী হতে পারে। তবে আরও যারা আছে, এখনও সময় আছে, এখান থেকে যদি বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত ব্যাপারটিতে উন্নতি করতে পারি, আমার মনে হয় আমাদের দল আরও ভালো করবে।’
সাইফউদ্দিনের পারফরম্যান্সে খুশি অধিনায়ক লিটন দাস। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা একজন ক্রিকেটারের জন্য পারফর্ম করা এত সহজ নয়, মনে করিয়ে দেন লিটন। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে সাইফউদ্দিন কি দলের চাহিদা পূরণ করতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নে লিটন বলেন, ‘আমার মনে হয়, সে (চাহিদা) ফুলফিল করেছে। তার জন্য সহজ না, এতদিন পর খেলায় ফেরা...এখানে টানা দুই ম্যাচ খেলেনি। বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও ভালো করেছে। সে যে সামর্থ্যের খেলোয়াড়, সেরাটা দিতে পারলে বাংলাদেশ দল অনেক উপকৃত হবে।’
যদি সব ঠিকঠাক থাকে, বাংলাদেশের পরের অভিযান আগামী সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি। পরের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ অক্টোবরে, দেশের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ।