ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কোচিং পেশায় আগ্রহ বাড়ছে ক্রিকেটারদের

কোচিং পেশায় আগ্রহ বাড়ছে ক্রিকেটারদের

বাংলাদেশে ক্রিকেট নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই। ক্রিকেট খেলায় ক্যারিয়ার গড়তে চান এমন মানুষের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে নানা প্রতিবন্ধকতা কিম্বা শারীরিক অসামর্থের কারণে অনেকের পক্ষেই ক্রিকেটার হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করতে চান এমন মানুষদের জন্য সবসময়ই ক্রিকেট কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার পথ খোলা থাকে। এ পেশায় খেলোয়াড় হওয়া ছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মঞ্চে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার আছে। সে ক্ষেত্রে আম্পায়ারিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে হবে। তবে কোচিং করানোটা মোটেও সহজ না। কেননা ক্রিকেট কোচিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোর্স আছে, সেসব কোর্সে ধাপে ধাপে পার করতে হয়। নানা ধাপ পেরোনোর পরই মিলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তবে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে অনেকে এখন কোচিংয়ে ঝুঁকছেন।

ক্রিকেট থেকে অবসরের পর রাজিন সালেহ, মোহাম্মদ রফিক, নাজম্লু হোসেনরা এরই মধ্যে কোচিং পেশায় নাম লিখিয়েছেন। এ ছাড়া আরও একাধিক সাবেক ক্রিকেটার কাজ করছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে। দেশে দক্ষ কোচ তৈরির জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) স্থানীয় কোচ এবং ক্রিকেটারদের উদ্বুদ্ধ করতে আয়োজন করেছে তিনদিন ব্যাপী লেভেল-১ কোচিং কর্মশালা। যে কর্মশালায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছে বিসিবি। শুধু ক্রিকেটার নয়, বিভিন্ন সংস্থা থেকেও কোচিংয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন অনেকে। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্টের হেড অব অপারেশন্স হাবিবুল বাশার জানালেন, দেশে এখন কোচিং পেশায় আগ্রহ বাড়ছে, এটা ক্রিকেটের বিকাশের জন্য ইতিবাচক সংকেত। গতকাল শনিবার মিরপুরে তিনি বলেছেন, ‘ক্রিকেটটা ছড়িয়ে দিতে হলে শুধু ক্রিকেট খেললেই হবে না, ক্রিকেট এডুকেটেড হওয়া খুব জরুরি। তাই এখানে যারা (কোর্স করতে) আসছেন, তারা আসলে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করেন। আমরা যদি তাদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে পারি, একটু আপগ্রেড করতে পারি, সেটা দিনশেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই কাজে লাগবে। আমরা সামনে আরও বেশি বেশি এ ধরনের সেমিনার করব।’

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও নির্বাচক বলেন, ‘কোয়ালিটি কোচিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটারই একটা প্রয়াস আমাদের এবারের সেমিনার। আমাদের ক্রিকেটারদের আগে এত কোচিংয়ে আসতে দেখিনি। ইনফ্যাক্ট পাঁচণ্ডদশ বছর আগেও এত কোচিংয়ে আসতে চাইত না। এখন অনেককেই দেখছি, প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার শেষ করে কোচিংয়ে আসতে চাইছে।’ খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন এমন ক্রিকেটাররাও কোচিংয়ে আসতে আগ্রহ দেখাচ্ছে যা মনে ধরেছে হাবিবুলের। বিসিবি তাদের পাশে থাকবে এবং সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের এগিয়ে নেবে সেই আশ্বাসও দিয়েছেন, ‘লেভেল ওয়ান কোর্স করার জন্য অনেকের সিভি জমা পড়েছে। অনেকের সিভি জমা পড়েছে মানে যারা ফার্স্ট ক্লাস প্লেয়ার যারা এখনও খেলছেন অথবা আর এক দুই বছর খেলবেন তারা কোচিংয়ে আসতে চাচ্ছেন। ভালো কোচ যদি আমরা প্রডিউস করতে পারি তাহলে অবশ্যই বাইরের দেশে তারা ডাক পাবেন। বাট আমার আসলে মূল চিন্তার বিষয় আমাদের যে ক্রিকেটটা সেখানে কীভাবে আমরা আরও ভালো কোচ বানাতে পারি, সেখানে কীভাবে ভালো কোচিং করাতে পারি।’ উন্নত প্রশিক্ষণের অভাবে বাংলাদেশের কোচিং ততটা মানসম্পন্ন নয়। বিষয়টি নিজেই জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। কয়েক দিন আগে একটি ফেডারেশনের আমন্ত্রণে প্রধান অতিথি হয়ে এসে দেশের কোচিং নিয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় কোচিং নিয়ে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরেন আইসিসির সাবেক এই কর্মকর্ত। জাতীয় দলের বর্তমান ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে বুলবুল বলেছেন, ‘উনি তো এখনও ব্যর্থ হননি, ভালো করছেন।

আপনি দেশীয় কোচ আশা করছেন, তবে দেশীয় কোচ এই পর্যায়ে (জাতীয় দল) কোচিং করানোর মতো যে পর্যায়ের প্রশিক্ষণ বা সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল, বিগত বহু বছর আমরা সেটি দিতে পারিনি। আমি এখানে ঘোষণা দিতে চাই, আগস্ট মাসের শেষে আমরা একটা লেভেল-থ্রি কোচিং কোর্স করাব, যেখানে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের

বিভিন্ন দলের এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হতে পারবেন। আমরা একটা কোচিং সামিট করব সেপ্টেম্বরে, যেখানে আমরা ব্যাটিং কোচ, ফাস্ট বোলিং কোচ, ফিল্ডিং কোচ, উইকেটকিপিং কোচ এই স্পেশালাইজড কোচিং কোর্সটা আমরা সেপ্টেম্বরে করব আর অচিরেই দেশের যে কোচরা আছেন, তাদের আপগ্রেড করব এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করব, কারণ আমাদের কোচদের যদি সুযোগটা না দিই, তাহলে তাদের প্রতি অবিচার হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত