
ভাগ্যের দরজা খুলল বাংলাদেশ হকির সামনে। ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে এশিয়া কাপ হকির আসরে সুযোগ মিলল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। পাকিস্তান দল ভারতের মাটিতে খেলতে রাজি না হওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে তারা, আর সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে এশিয়ান হকি ফেডারেশন ডাক দিয়েছে বাংলাদেশকে। ২৯ আগস্ট ভারতে বিহারে শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ হকি। টুর্নামেন্টের মাত্র ১১ দিন আগে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেল। যদিও গত পাঁচ দিন ধরে বাংলাদেশ হকি দল অনুশীলন ক্যাম্প করছে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে. কর্ণেল (অব.) রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর আয়োজক ভারত ও এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) দুপক্ষই আমাদেরকে এশিয়া কাপে খেলার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরাও খেলতে সম্মত তা এরমধ্যেই জানিয়েছি। এশিয়া কাপ খেলার অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতাও আমরা দ্রুত সম্পন্ন করব।’ বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভিসা বেশ সময় সাপেক্ষ। টুর্নামেন্টের আমন্ত্রণ পেলেও এখন প্রস্তুতি ছাপিয়ে ভিসাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ ফেডারেশনের সামনে।
সাধারণ সম্পাদকের কথা, ‘আমরা আজ-কালকের মধ্যে জিও (সরকারি আদেশ) পেয়ে যাওয়ার আশাকরি। অনলাইনে ভিসার জন্য আজই আবেদন করা হবে। ভারত ও এশিয়ান হকি ফেডারেশন উভয়ে ভিসার ব্যাপারে সহায়তা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।’ ১৯৮২ সাল থেকে বাংলাদেশ এশিয়া কাপ হকি খেলছে। ১৯৮৫ ও ২০১৭ সালে এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়ের টুর্নামেন্টের স্বাগতিকও হয়েছিল। এবার এএইচএফ কাপে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল প্রথমবারের মতো। পাকিস্তান অংশগ্রহণ না করায় এএইচএফ কাপের তৃতীয় স্থান অর্জনকারী বাংলাদেশ মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেল। পাকিস্তান ও ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম আগেই জানিয়েছিল, নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হকির এ টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করবে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে নাম প্রত্যাহার না করায় বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পাচ্ছিল না। অবশেষে টুর্নামেন্ট শুরুর ১১ দিন আগে খেলার আমন্ত্রণ পেল বাংলাদেশ।
এশিয়া কাপটি ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফায়ার হিসেবেও কাজ করবে, তাই পাকিস্তানের অনুপস্থিতি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তান ও ভারতের সম্পর্কের কারণে এই ধরনের পরিস্থিতি আগেও ঘটেছে। উদাহরণ স্বরূপ, ২০১৬ সালের জুনিয়র বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তান দল নিরাপত্তাজনিত কারণে অংশ নিতে পারেনি, যার ফলে ভারত জয়ী হয়। তবে গত বছর ২০২৩ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তান দল চেন্নাইয়ে অংশ নিয়ে ষষ্ঠ দল হিসেবে শেষ করেছিল।
মূলত পাকিস্তানের নাম প্রত্যাহারের সম্ভাবনা আগেই আঁচ করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তাই আগে থেকেই মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছিল তারা। বর্তমানে জাতীয় দলের ক্যাম্পও চলছে জোরেশোরে। এশিয়া কাপের গুরুত্বও কম নয়। টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি জায়গা করে নেবে আগামী বছরের হকি বিশ্বকাপে। আর র্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে পরের পাঁচ দল পাবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলার সুযোগ।