
হোক বয়সভিত্তিক কিম্বা জাতীয় দল, দেশের নারী ফুটবলে চলছে জয়জয়াকার। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাও লাল সবুজ দলের। এবার স্বাগতিক ভুটানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার ভুটানের চ্যাংলিমিথান স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে কোচ মাহবুবুর রহমান লিটুর দলকে কিছুটা অগোছালো দেখালেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছন্দে ফেরে তারা। ম্যাচের চার মিনিটে ভুটানের কুয়েনদেন সোনামের আচমকা শট কোনমতে ফেরান বাংলাদেশের গোলরক্ষক মেঘলা রানী রয়। ফিরতি বল ক্লিয়ার করেন বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। এরপর ম্যাচে ফিরতে শুরু করে বাংলাদেশ। ম্যাচের ১১ মিনিটে মোমিতার শট ভুটানের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে আলপি আক্তারের শট ঠেকান ভুটানের গোলরক্ষক কেলজাং ওয়াংমো। ২০ মিনিটে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল ডি-বক্সের কাছাকাছি পেয়ে যান সুরভী আকন্দ প্রীতি। বল নিয়ে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে একা পেয়ের বল জালে জড়াতে পারেননি তিনি। কাউন্টার অ্যাটাকে বিপদজনক হয়ে ওঠে ভুটান। ভুটানের দূরপাল্লার শট ঝাপিয়ে ঠেকান মেঘলা রানী।
এরপর দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। তবে ডি-বক্সের কাছে গিয়ে খেই হারাচ্ছিল দুই দলের আক্রমণগুলো। ২৮ মিনিটে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল পান আলপি আক্তার বল নিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে যান তিনি। আলপির জোড়ালো শট ঝাপিয়ে ঠেকান ভুটানের গোলরক্ষক ওয়াংমো। ৩৪ মিনিটে বাংলাদেশকে নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত করে ভুটান। মামনি চাকমার কর্নার থেকে হেড করেন আলপি আক্তার। তবে গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন ভুটানের ফুটবলার। ফিরতি বলে সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩৭ মিনিটে বক্সের ভেতর বিপদজনক অবস্থানে বল নিয়ে ঢুকে যান আলপি আক্তার। তার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ভুটানের গোলরক্ষক। ৩৯ মিনিটে ভুটানের তিন ফুটবলারকে কাটিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পরেন উম্মে কুলসুম। তার বাকানো শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ভুটানের গোলরক্ষক।
৪২ মিনিটে বাংলাদেশকে গোল বঞ্চিত করে ক্রসবার। ফাতেমা আক্তারের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে বল পান সুরভী আকন্দ প্রীতি। তার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। প্রথমার্ধের যোগ করার সময়ে (৪৭ মিনিট) ডেডলক ভাঙেন সুরভী আকন্দ প্রীতি। আলপি আক্তারের উঁচু করে বাড়ানো বল পেয়ে যান সুরভি। গোলরক্ষক এবং ভুটানের দুই ফুটবলারও এগিয়ে আসলে জটলার মধ্য থেকে হেডে বল জালে জড়ান প্রীতি। এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির গোলের ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ৪৮ মিনিটে বদলি নামা ইয়ারজান বেগমের শট ফিরিয়ে দেন ভুটানের গোলরক্ষক ওয়াংমো। ৫৪ মিনিটে বুলেট গতির শটে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আলপি আক্তার। গোলের যোগনদাতা ফাতেমা আক্তার। ফাতেমার ডিফেন্সচেড়া পাস থেকে বল নিয়ে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে ভুটানের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন আলপি। ৫৯ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন দলের হয়ে প্রথম গোল করা সুরভী আকন্দ প্রীতি। ৬১ মিনিটে গোল ব্যবধান কমায় ভুটান। বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে শট নেন ভুটানের কুয়েনদেন সোনাম। তবে সেই শট ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক মেঘলা। শট ফিরিয়ে দিলেও বল নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি তিনি। ফিরতি বলে রিনজিন দেমা ছোদেন গোল করে ব্যবধান কমান। ৬৪ মিনিটে বক্সের ভেতর মামনি চাকমা ক্রস দেন পুর্নিমা মারমাকে। তার জোড়ালো শট ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ভুটানের গোলরক্ষক। ৬৫ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের হয়ে তৃতীয় গোল করেন আলপি আক্তার। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল জটলা থেকে আলতো টোকায় জালে জড়ান আলপি।