
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে চলমান বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি গভীর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন নারী ক্রিকেটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। রুমানা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘দিন দিন ক্রীড়াঙ্গনের পরিবেশ আরও বেশি নষ্ট হওয়ার আগে দ্রুত একটা সুষ্ঠু তদন্ত কামনা করছি এবং এটা যেন স্বাধীন তদন্ত হয়। কোনো অপকর্মে জড়িত ব্যক্তি যেন এই তদন্ত থেকে বাদ না পড়ে, বিসিবিকে অনুরোধ করব। ক্রিকেটকে ভালোবেসে ক্রিকেট খেলতে এসেছিলাম, ক্রিকেটকে ঘৃণা করে ছাড়তে চাই না।’
রুমানার এই বক্তব্য নারী ক্রিকেটে চলমান উত্তেজনা ও অস্থিরতার প্রতিফলন বলে মনে করছেন অনেকে। তিনি জোর দিয়েছেন স্বাধীন তদন্তের ওপর, যাতে প্রকৃত দোষীরা দায়মুক্তি না পায়। এর আগে সাবেক অলরাউন্ডার জাহানারা আলম এক সাক্ষাৎকারে নারী দলের সাবেক ম্যানেজার ও নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন। পাশাপাশি অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধেও বৈষম্য ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করেন তিনি। এরপর থেকেই নারী ক্রিকেটে একের পর এক অভিযোগ ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া সামনে আসছে। রুমানা সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি ২০২৩ সাল থেকেই বলে আসছি, টিমে এমন কিছু ঘটছে। একজন মেয়ে কান্নাকাটি করে অভিযোগ করে, এটা হালকাভাবে নেওয়ার বিষয় না।’
তিনি আরও জানান, জিম্বাবুয়ে সফর শেষে জাহানারা বিসিবিতে ছয় পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং সেই অভিযোগই পরে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। রুমানার দাবি, বিষয়টি বিসিবিকে জানানো হলেও যথাযথ তদন্ত হয়নি। ‘মিডিয়া জানত, দেশের সবাই জানত; কিন্তু বিসিবি জানত না-এটা বিশ্বাস করা কঠিন,’ বলেন তিনি। বিসিবির প্রতি আহ্বান জানিয়ে রুমানা আরও বলেন, ‘আমরা সিনিয়ররা না বললে জুনিয়ররা কখনই মুখ খুলবে না। এখন বিষয়টা শুধু দেশের নয়, পুরো বিশ্ব দেখছে। বোর্ড যদি আগেই ব্যবস্থা নিত, আজ এতদূর গড়াত না।’ এদিকে, নারী ক্রিকেটে সাম্প্রতিক অভিযোগগুলো তদন্তে বিসিবি এরইমধ্যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এর আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তারিক উল হাকিম, সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিসিবি পরিচালক রুবাবা দৌলা এবং ব্যারিস্টার সরওয়াত সিরাজ শুক্লা।