ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মুশফিকের টেস্টে জয় থেকে চার উইকেট দূরে বাংলাদেশ

মুশফিকের টেস্টে জয় থেকে চার উইকেট দূরে বাংলাদেশ

প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ছিলেন লিটন দাস আর মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি ডাকছিল সাদমান ইসলামকে। কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন মুমিনুল হকও। কিন্তু কাঙ্গিত তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারলেন না দুজনের কেউ। বরং শততম টেস্ট আরেকটি মাইলফলকে নিজেকে রাঙালেন মুশফিকুর রহিম। টেস্ট উইকেট শিকারে সবাইকে ছাড়িয়ে সবার ওপরে উঠে গেলেন তাইজুল ইসলাম। ম্যাচের গতিপথ অনুমিতই। সিলেটের পর ঢাকা টেস্টেও জয়ের সুবাতাস পাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বড় জয় কেবল সময়ের ব্যাপার। আয়ারল্যান্ডের আর ৪ উইকেট নিতে পারলেই সিরিজটা নিজেদের করে নিতে পারবে। মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে আয়ারল্যান্ডের রান ৬ উইকেটে ১৭৬। জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন আরও ৩৩৩ রান। সেই সমীকরণ ভাবাও আসলে অবান্তর। শেষ দিনে চার উইকেট নিতে বাংলাদেশের কতক্ষণ লাগে, সেটিই কেবল দেখার।

গতকাল শনিবার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৪ উইকেটে ২৯৭ রানে। মুমিনুল আউট হন ৮৭ রানে, সাদমান ৭৮ রানে। মুশফিক অপরাজিত রয়ে যান ৫৩ রানে। শততম টেস্টে সেঞ্চুরির পাশাপাশি ফিফটিও উপহার দিলেন তিনি, টেস্ট ইতিহাসে যা পেরেছেন আর কেবল রিকি পন্টিং। ১ উইকেটে ১৫৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে বাংলাদেশ। দলের লিড বাড়ানোর পাশাপাশি প্রথম মাইলফলকের হাতছানি ছিল সাদমানের সামনে। কিন্তু আগের টেস্টে ৮০ রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যান এবার সেটিও করতে পারেননি। আউট হয়ে যান ৭৮ রানে। ৫৪ রানের জুটি ভাঙার পরের ওভারেই আরেকটি উইকেট পায় আয়ারল্যান্ড। ক্যারিয়ারে কিছু রান যোগ করার সুযোগ হাতছাড়া করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (১)। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা তরুণ অলরাউন্ডার জর্ডান নিল স্বাদ পান প্রথম টেস্ট উইকেটের।

এরপর মুমিনুল ও মুশফিকের জুটি। ৭৬ বলে ফিফটি ছুঁয়ে এগিয়ে যান মুমিনুল। ১৬ রানে সহজ ক্যাচ দিয়েও রক্ষা পেয়ে এগিয়ে যান মুশফিক। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ান দুই ব্যাটসম্যান লাঞ্চের আগের গড়ে তোলেন শতরানের জুটি। লাঞ্চের সময় মুমিনুল অপরাজিত ছিলেন ৭৯ রানে, ৪৪ রানে মুশফিক। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ আবার ব্যাটিংয়ে নামে মূলত মুমিনুলের সেঞ্চুরির জন্য। সেই অপেক্ষা শেষ ১০ মিনিটেই। নাহ, তার সেঞ্চুরি হয়নি। গ্যাভিন হোয়ের লেগ স্পিনে আলতো করে ক্যাচ তুলে দেন তিনি কার্টিস ক্যাম্ফারের হাতে। মুমিনুল যখন ৮৭ রানে ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে, সবার নজর তখন ড্রেসিং রুমের দরজায়। সেখানে দেখা গেল শান্তকে, হাত ইশারায় বাংলাদেশ অধিনায়ক ডেকে নিলেন মুশফিককেও।

৫০৮ রানে এগিয়ে ইনিংস ছাড়ল বাংলাদেশ। মুশফিক তখন অপরাজিত ৫৩ রানে। বোলিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ইবাদত হোসেনের সঙ্গে অনুমিতভাবেই তাইজুলকে দিয়ে শুরু করে বোলিং আক্রমণ। দলকে প্রথম উইকেটও এনে দেন তিনিই। আইরিশ অধিনায়ক অ্রান্ড্রু বালবার্নিকে ফিরিয়ে সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে বাঁহাতি এই স্পিনার হয়ে যান দেশের সফলতম বোলার। নিজের পরের ওভারেই তিনি বিদায় করেন পল স্টার্লিংকে। কেড কারমাইকেল ও হ্যারি টেক্টর তৃতীয় উইকেটে গড়েন অর্ধশত রানের জুটি। হাসান মুরাদ আক্রমণে এসে প্রথম বলেই জুটি ভাঙেন কারমাইকেলকে ফিরিয়ে। স্রোতের বিপরীতে লড়াই করে টেক্টর ফিফটি করেন ৭৮ বলে। এরপরই মনোযোগ হারিয়ে তিনি উড়িয়ে মারেন হাসান মুরাদকে। লং অফে ভালো ক্যাচ নেন মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ৭৫ রান করা লর্কান টাকারকে (৭) এবার টিকতে দেননি সৈয়দ খালেদ আহমেদ। বেশ কিছুক্ষণ লড়াই করে শেষ বিকেলে স্টিভেন ডোহেনি ফেরেন তাইজুলের তৃতীয় শিকার হয়ে। কার্টিস ক্যাম্ফার একপ্রান্তে লড়াই করে দিনটা পার করে দেন। পাঁচ টেস্ট পর মিরপুরে ম্যাচ গড়ায় পঞ্চম দিনে। এর আগে পাঁচ টেস্ট মিরপুর টেস্ট পঞ্চম দিনে গিয়েছিল। ২০২২ সালে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট। সব মিলিয়ে ২০২০ থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র তিন টেস্ট পঞ্চম দিনে গিয়েছে। বাকি সবগুলো চারদিনেই সমাপ্তি। জানিয়ে রাখা ভালো, প্রতিটি টেস্টেই ফল বেরিয়েছে। এই ম্যাচও ড্র হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আজ শেষ দিনে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়ে আয়ারল্যান্ড চমকে দেয় কিনা দেখার। নয়তো বাংলাদেশ প্রত্যাশিত জয়ের অপেক্ষায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত