
একটা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ছিল বারুদে ভরা এক ফুটবল দ্বৈরথ। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ বললেই পুরো দেশ দু’ভাগে ভাগ হয়ে যেতো। মাঠে এবং মাঠের বাইরে চলত সমান লড়াই। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের সেই জৌলুস, আকর্ষণ, উত্তেজনা আর প্রতিদ্বন্দ্বীতার কিছুই নেই। দর্শক উৎসাহ, আগ্রহ আর উদ্দীপনাও গেছে অনেক কমে। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রবাসী হামজা চৌধুরীকে ঘিরে নতুন করে জেগে উঠেছে দেশের ফুটবল। তাতে ঐতিহ্যবাহী দুই দলের লড়াই নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। ফুটবলের নব জাগরণের মুহূর্তে ঘরোয়া ফুটবল টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আবাহনী-মোহামেডান। তবে আবাহনী এ মুহূর্তে কিছুটা সঙ্কটে। নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় খেপ খেলতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আরিফুল ইসলাম।
এখনও ক্লাবে যোগ দিতে পারেননি তিনি। এদিকে বকেয়া বেতনের জন্য অনুশীলন বয়কট করেছিলেন ফুটবলাররা। তবে অনেক জোড়াজুড়ির পর অবশ্য বড় ম্যাচ খেলতে রাজী হয়েছেন তারা। এমন সংকীর্ণ অবস্থায় বাংলাদেশ ফুটবল লিগে আজ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনীর মুখোমুখি হতে যাচ্ছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কুমিল্লার শহিদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বেলা পৌঁনে তিনটায় শুরু হবে ম্যাচটি। একই দিনে একই সময়ে আরও তিনটি ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে আরামবাগ ও কিংস, ফর্টিজ এফসি ও পুলিশ এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব।
বাংলাদেশ ফুটবল লিগের প্রথম দুই ম্যাচ থেকে মাত্র এক পয়েন্ট পেয়েছে মোহামেডান। তাই আবাহনীর বিপক্ষে শুধু মর্যাদার নয়, সাদা কালোদের পয়েন্টও ছিনিয়ে আনার মতো গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ এটি। অথচ এমন ম্যাচের আগে ক্লাবের খেলোয়াড়রা বকেয়া বেতনের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। প্রায় তিন মাসের মতো বেতন বকেয়া থাকায় তারা অনুশীলন করতে চাননি, আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচও খেলতে চাননি। দলের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীবের কথা, ‘ফুটবলাররা অনুশীলনই করতে চায়নি। এমনকি আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচের জন্য তাদের রাজি করিয়েছি। এরপর কি হবে আমি বুঝতে পারছি না।’
তিনি যোগ করেন, ‘ফুটবলাররা আলটিমেটাম দিয়েছে এ মাসের দুটি ম্যাচ খেলবে এবং তারপর সমাধান না হলে ১ ডিসেম্বর থেকে অনুশীলন বয়কট করবে। সোমবারের পর আমাদের পরের ম্যাচ ২৯ নভেম্বর ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের বিপক্ষে।’ জানা গেছে, ক্লাবের বিদেশি ফুটবলারদেরও একই অবস্থা। কারও বকেয়া ৩ মাস, কারও দুই-আড়াই মাসের বেতন বাকি। আর স্থানীয়দের দেই-দিচ্ছি, এভাবে ম্যানেজ করেন কর্মকর্তারা। এতে শৃংখলা ভেঙ্গে কেউ কেউ খেপও খেলতে চলে যাচ্ছে।
ধার-দেনা করেই চলছে ক্লাব, এমনটাই জানালেন নকীব।