কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের সহিলাটী গ্রামের জামে মসজিদে বসেছে মৌমাছির মেলা। কয়েক বছর যাবত শীত মৌসুমে বসে অসংখ্য মৌচাক। কখনোই কোনো মুসল্লিকে কামড় দেয়নি এসব মৌমাছি। মৌচাক থেকে আহরিত মধু বিক্রির টাকা মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয় বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের সম্মুখ ভাগের প্রবেশ পথের উপরের দিকে এবং পিছনের দেয়ালের উপরের দিকে একই লাইনে অসংখ্য মৌচাক। এরই মাঝে মুসল্লিসহ সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করছেন।
এসময় স্থানীয় মুসুল্লি শাহাব উদ্দিন ও নুরুজ্জামান খান এর সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, প্রায় কয়েক বছর যাবত নিয়মিত মৌচাক বসে মসজিদটিতে। প্রথম বছর কম ছিল কিন্তু পরের বছর গুলোতে অনেকগুলো মৌচাক মসজিদে ও গাছে বসেছে।
তিনি জানান, নিয়মিত নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে আসেন তাদের মতো আরও অনেক মুসুল্লি। কিন্তু কখনোই মৌমাছি মসজিদ প্রাঙ্গণে কাউকে কামড় দেয়নি। মসজিদের মৌচাক দেখতে অনেক মানুষ আসেন বলে জানান তারা। মসজিদটি মৌমাছির মসজিদ বলে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
এ বিষয়ে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মামুন আহমাদ বলেন, কয়েক বছর ধরে শীতের মৌসুমে মসজিদের দেয়ালের চতুর্দিকে মৌমাছির চাক বসে। প্রথম দিকে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা লোকজন ও মসজিদের সামনের পথ দিয়ে চলাচল করা লোকজন আতঙ্কে থাকতো। এখন আর কেউ আতঙ্কিত হয় না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ও মসজিদের সামনের পথ দিয়ে চলাচল করতে করতে আমাদের কাছে এখন বিষয়টি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তাছাড়া আজ অব্দি কোনো ব্যক্তিই মৌমাছির দ্বারা কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি বরং মসজিদের দেয়ালে মৌমাছির চাক বসায় আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। যখন মৌমাছির চাক ভাঙা হয় তখন মধু বিক্রির টাকা মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যয় হয়। এছাড়াও সকালে মসজিদের বারান্দায় ছোট ছোট বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষা দেওয়া হয়। এদের মধ্যেও কেউই এখনো মৌমাছির দ্বারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। তিনি আরও বলেন, মসজিদের বারান্দায় মৌমাছির চাক বসায় এলাকাবাসী অনেক খুশি।
মসজিদ কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, মৌমাছিগুলো শীতের শুরুতে বাসা বাঁধে। মাঘ মাসের শেষের দিকে চলে যায়। বছরের বাকি সময় মৌচাক থাকে না। মৌসুমের শুরুতে এসে আবারও মৌচাক তৈরি করে মৌমাছিরা।
তিনি বলেন, মৌমাছি কাউকেই কামড় দেয় না। মৌচাকের চারপাশে দেয়াল থেকে ময়লা পরিষ্কার করতেও সমস্যা হয় না।