চাঁদপুরের মতলব-বাবুরহাট-পেন্নাই সড়কে আবারো জৈনপুর পরিবহনের বাস চাপায় মো. মুরাদ হোসেন (৩৮) নামে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে ওই সড়কের বড়দিয়া আড়ং বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মুরাদ লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার মধুপুর গ্রামের শাহজাহানের ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বাসটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার পর বাস চালক পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুপুরে বাবুরহাট থেকে ঢাকাগামী জৈনপুর পরিবহন নামক যাত্রীবাহী বাসটি রওয়ানা হলে বড়দিয়া সরকার বাড়ির নিকট আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী মুরাদ হোসেন গুরতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। পরে এম্বুলেন্সে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথিমধ্যে তার অবস্থার অবনতি হয় এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আশরাফুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে সংবাদ পেয়ে নিহত মুরাদ হোসেনের স্ত্রী, দুই ছেলেসহ স্বজনরা চলে আসলে তাদের হৃদয়বিদারক আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে যায়। নিহত মুরাদ হোসেনের স্ত্রী ইফরিন সুলতানা বলেন, তার স্বামী ঢাকা হাই কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করতেন। তার পরিবার-পরিজনদেরকে নিয়ে ঢাকায় একটি বাসায় থাকতেন। পবিত্র ঈদুল আযহার পূর্বে সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন। ঈদের পরদিন তিনি ঢাকায় চলে যান। পরিবারদেরকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। তাই মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন।
বরদিয়া এলাকার রিপন ভুঁইয়া, শারমিন আক্তারসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, মতলব-ঢাকা সড়কে জৈনপুর পরিবহন বাসগুলো বেপরোয়া ভাবে যাতায়াত করে। এছাড়া প্রায় সময় হেলপার দিয়ে বাস চালায়। তাদের বেপরোয়া চালানোর কারণে গত ৮ জুন একই এলাকায় জৈনপুর পরিবহন বাস চাপায় সিএনজির চালক ও এক যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং আহত হন চার যাত্রী।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেহ আহমেদ বলেন, সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় মোটরসাইকেল আরোহীকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে বাসটি জব্দ করা হয়। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে পরিবারের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।