পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক নজরুল ইসলাম। শীতপ্রধান দেশের ফল হিসেবে পরিচিত স্ট্রবেরি এখন ঈশ্বরদীর কৃষকদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাজারে ভালো চাহিদা ও দাম পাওয়ায় এ অঞ্চলের অনেক কৃষক স্ট্রবেরি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
২০১৪ সালে রাজশাহীতে এক কৃষকের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন নজরুল ইসলাম। প্রথমে দুই বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করলেও বর্তমানে তিনি চার বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি উৎপাদন করছেন। ধাপে ধাপে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তিনি এখন নিজেই স্ট্রবেরি চারা উৎপাদন করছেন এবং লাভবান হচ্ছেন। তার সাফল্য দেখে গ্রামের অন্য কৃষকরাও স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
বর্তমানে ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নে পলিথিন মালচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্ট্রবেরি চাষ করছেন নজরুল ইসলাম। তিনি উচ্চ ফলনশীল ও সুস্বাদু আমেরিকান ফেস্টিভ্যাল, উইন্টার ডন, থাইল্যান্ড ও বারি-৩ জাতের স্ট্রবেরি চাষ করছেন।
তিনি জানান, অক্টোবরে চারা রোপণ করা হলে ডিসেম্বর থেকে গাছে ফুল আসে এবং মার্চে ফল পাকতে শুরু করে। এবারের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন আরও ভালো হতে পারে বলে তিনি আশা করছেন।
চার বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষে নজরুলের ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, যেখানে বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রম খরচ অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে তিনি ১৮ হাজার স্ট্রবেরি চারা রোপণ করেছেন।
তিনি আশাবাদী, প্রতি বিঘায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করতে পারলে মোট আয় ১৮ থেকে ২১ লাখ টাকা হবে এবং লাভ হবে প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
দুই-তিন বছর আগেও ঈশ্বরদীতে ব্যবসায়ীরা স্ট্রবেরি কিনতে আসতেন না। কিন্তু এখন ঢাকা, খুলনা, সিলেট, বগুড়া, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে ব্যবসায়ীরা স্ট্রবেরি কিনতে আসছেন। এতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন এবং স্ট্রবেরি চাষ লাভজনক হয়ে উঠছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রহল্লাদ কুমার কুন্ডু বলেন, “ফল ও সবজি উৎপাদনে ঈশ্বরদীর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। নজরুল ইসলাম স্ট্রবেরি চাষে সফলতা পেয়েছেন এবং কৃষি বিভাগ তাকে সহায়তা দিয়েছে। তার সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।”
