রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কম রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) রংপুরে স্বল্প মূল্যে পাঁচটি পণ্য বিক্রি করছে। তবে সীমিত সরবরাহের কারণে অসংখ্য নিম্নবিত্ত ও শ্রমজীবী মানুষ ট্রাকের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও খালি হাতে ফিরছেন।
রংপুর নগরীর ১০টি স্থানে টিসিবির ট্রাকে ৫৯০ টাকার প্যাকেজে বিক্রি করা হচ্ছে—২ কেজি মসুর ডাল, ২ কেজি ময়দা, ১ লিটার সয়াবিন তেল. ১ কেজি চিনি ও ০.৫ কেজি খেজুর।
এই প্যাকেজের বাজার মূল্য প্রায় ৯৫০ টাকা হওয়ায় সাধারণ মানুষ ভর্তুকির এ সুযোগ নিতে সকাল ৮টা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়ে যায় এবং অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে যান।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখো গেছে রংপুর নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাতাসকান্দি এলাকায় সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে এক হাজারের বেশি মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বেশিরভাগই গৃহিণী ও শ্রমজীবী নারী।
নগরীর গুরপাড়া এলাকার গৃহিণী মাজেদা বেগম বলেন, "আমার স্বামী রিকশা চালান, সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই কম দামে টিসিবির পণ্য নিতে এসেছি, কিন্তু পেলাম না।" একইভাবে পণ্য না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন কামাল কাজলার গৃহিণী ঘূর্ণিনা খাতুন ও জরিলা বেগম।
বেলা ১২টার দিকে ট্রাক আসার পরপরই লাইন ভেঙে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। যারা সামনে ছিলেন, তারাই পণ্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে সব পণ্য বিক্রি শেষ হয়ে যায় এবং প্রায় ৩০০ পরিবার খালি হাতে ফিরে যায়।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, একটি সিন্ডিকেট চক্র প্রতিদিন ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে বেশি পণ্য কিনে তা বেশি দামে বিক্রি করছে। পণ্য বিক্রির সময় যথাযথ তদারকি না থাকায় এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, "আমরা বিষয়টি নজরে এনেছি। প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছে পণ্য পৌঁছাতে তদারকি টিমের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।"
টিসিবির রংপুর আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, "নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ১০টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে প্রতিটি ট্রাকে বরাদ্দ ৪০০ জনের জন্য হলেও, চাহিদার কারণে প্রায় ১০০০ জন উপস্থিত হন, ফলে সবাইকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।"