থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে গত ৮ মে দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এসময় সাথে ছিলেন তার শ্যালক ডা. নওশাদ খান এবং ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ।
পরের দিন সকাল থেকেই সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ হঠাৎ দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা। তিনি কীভাবে দেশের বাহিরে গেলেন তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য। অবশেষে এ বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে পিতা আবদুল হামিদকে নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে আবেগঘন একটি পোস্ট দিয়েছেন বাবার সাথে থাকা ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ। ওই পোস্টে হুইল চেয়ারে বসে থাকা তার বাবার একটি ছবিও রয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পোষ্টটিতে ১ হাজার ৬ শ'য়েরও বেশি মানুষ মন্তব্য করেছেন। পোস্টটি শেয়ার করেছেন ৭৮৩ জন। এছাড়াও লেখাটি কপি করে নিজেদের ওয়ালে পোস্ট করেছেন বহু মানুষ।
রিয়াদ আহমেদ লিখেছেন, "এরকম একটা পোস্ট দিবার জন্য দুঃখিত। ৮২-৮৩ বৎসরের একজন বয়স্ক লোক যিনি কিনা অসুস্থতার কারণে এখন ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না, ২ ঘন্টা বসে থাকতে পারছেন না বাধ্য হয়ে বিছানায় শুয়ে পরেন। ওজন কমতে কমতে ৫৪ কেজিতে দাড়িয়েছে, যে কারণে নিজের কোন প্যান্ট পড়তে পারছেন না বাধ্য হয়েই লুঙ্গি পড়ে থাকতে হচ্ছে। যাকে বেটার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারগণ বোর্ড করে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য। যিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রকাশ্যে বলেছেন যে উনি আর পলিটিক্সের সাথে জড়িত হবেন না এবং তারপর পলিটিক্সের সাথে কোনোভাবে জড়িত হননি। আবার, যেখানে শত শত লোক বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করাতে নিয়মিত থাইল্যান্ড যাচ্ছে সেখানে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য তিনি আসতেই পারেন।
অথচ, এ ঘটনাটাকেই এত বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যা কল্পনাতীত। বানিয়ে মিথ্যা বলতে পারাটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে কিছু লোক। সকলেই দুয়া করবেন যেন তিনি সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসতে পারেন ইনশাআল্লাহ।
আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি তবে আল্লাহর লানত আমার উপর পরুক। আর যারা মিথ্যা প্রচার করছে তারা যদি তাদের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তওবা না করে তবে তাদের সবার উপর আল্লাহর লানত পরুক। আমিন ইয়া রাব্বুল আলামিন।"
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় বিএনপি কর্মীর দায়ের করা একটি মামলায় আসামীর তালিকায় নাম রয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ। আবদুল হামিদ ৮ মে দেশ ছাড়ার পর ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং জেলার পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হয়।