পাবনায় অবৈধ ইটভাটার গ্যাস ট্যাংকের তাপে বিঘার পর বিঘা ফসল পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিন ফসলি জমিতে কোনো ফলন হচ্ছে না। চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের কুলনিয়া ও ভাঁড়ারা ইউনিয়নের চরভাঁড়ারা এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক ও সচেতন এলাকাবাসী।
বুধবার (২৮ মে) চর ভাঁড়ারার বক্সপাড়া এলাকায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অবৈধ ইটভাটা বন্ধ এবং কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের প্রভাবশালী তায়েফ আলী সর্দার, দোগাছি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম ও ভাঁড়ারা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছে। এই ইটভাটার গ্যাসের তাপে ফসল, লিচু ও কলা বাগান, এমনকি আগাছা পর্যন্ত পুড়ে যাচ্ছে। গাছপালা শুকিয়ে যাচ্ছে, মাটি হয়ে পড়ছে শক্ত ও অনুর্বর। এতে তিন ফসলি জমিতে এখন আর কোনো ফলন হচ্ছে না। কৃষকেরা পড়েছেন চরম ক্ষতির মুখে।
তারা আরো বলেন, ভাটার আশপাশে ইচ্ছাকৃতভাবে বড় বড় গর্ত করে মাটি কাটা হচ্ছে, যার ফলে পাশের জমিগুলো ধসে পড়ছে। এতে শুধু জমির ক্ষতি নয়, বরং জমি দখলের এক নতুন কৌশলও চালু হয়েছে। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে নামমাত্র দামে জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ কৃষিভিত্তিক এলাকা একটি নীচু গর্তে রূপ নিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এলাকাবাসীরা জানান, এই ভাটার মাটি বহনের ভারী গাড়িগুলো চলাচলের কারণে এলাকার রাস্তা ভেঙে দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়েছে।
বক্তারা প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আশেপাশে দেড়শো মিটারের মধ্যে বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, বাজার ও জনবসতিপূর্ণ এলাকা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই ইটভাটা গুলো চলছে? কৃষিজমি রক্ষা এবং পরিবেশ সুরক্ষায় এখনই পদক্ষেপ না নিলে এটি ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। অবিলম্বে ইটভাটা বন্ধ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে মানববন্ধন থেকে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
