অনলাইন সংস্করণ
১৫:৫৫, ১১ জুন, ২০২৫
বিশ্ববাজারে ফের একবার কমেছে জ্বালানি তেলের দাম। চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় অনিশ্চয়তা, চীনের দুর্বল তেলচাহিদা এবং ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণার প্রভাবে বুধবার (১১ জুন) আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দর নিম্নমুখী হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এদিন সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ১৫ সেন্ট বা ০.২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি ব্যারেল ৬৬.৭২ ডলারে। একই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১০ সেন্ট বা ০.২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৬৪.৮৮ ডলার প্রতি ব্যারেল।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় একটি সমঝোতার কাঠামোতে পৌঁছালেও তা এখনও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানান, আলোচনা চূড়ান্ত হলেও আনুষ্ঠানিক অনুমোদন না আসায় বাজারে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা বলেন, 'মূল্য সংশোধনের পেছনে রয়েছে প্রযুক্তিগতভাবে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা এবং বাজারে সাবধানতা।' অপরদিকে, বিশ্লেষক টনি সাইকামোর জানান, 'চীনের অর্থনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা তেলের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।'
এছাড়া, ওপেক প্লাস জোট জুলাই মাস থেকে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়েছে, যা চলমান উৎপাদন হ্রাস প্রত্যাহারের ধারাবাহিক পদক্ষেপের অংশ। তবে, বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, বিশ্ববাজারে অতিরিক্ত সরবরাহের চাহিদা যথেষ্ট নাও থাকতে পারে।
ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের বিশ্লেষক হামাদ হুসেইন বলেন, 'সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশের অভ্যন্তরীণ মৌসুমি চাহিদা সাময়িক ভারসাম্য আনলেও বছরের শেষ নাগাদ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬০ ডলারে নামতে পারে।'
এদিকে, মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (EIA) তেল মজুত সংক্রান্ত সাপ্তাহিক প্রতিবেদন ১২ জুন প্রকাশিত হবে। বাজার সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে দেশটির অপরিশোধিত তেলের মজুত ৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল কমেছে। তবে, রয়টার্স পরিচালিত জরিপে বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, ৬ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের মজুত ২০ লাখ ব্যারেল কমলেও ডিজেল ও গ্যাসোলিনের মজুত কিছুটা বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, উৎপাদন পরিকল্পনা ও মজুত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে আগামী দিনগুলোতে তেলের দামে আরও ওঠানামা দেখা যেতে পারে।
